লন্ডনে ব্রেক্সিটবিরোধী আন্দোলনের সবথেকে বড় কর্মসূচি ১৯ অক্টোবর

চলতি সপ্তাহের শেষেরদিকে ব্রেক্সিটবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে সবথেকে বড় কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ওই কর্মসূচিতে জলবায়ু আন্দোলনের কর্মীদেরও যুক্ত হবার কথা রয়েছে। কর্তৃপক্ষ ধারণা করছে, ওই দিন ‘পিপলস ভোট’র (ইংল্যান্ডের একটি প্রচারণামূলক সংগঠন) আহ্বানে দেশটির পার্লামেন্টের বাইরে ১০ লাখের অধিক আন্দোলনকারী জড়ো হবেন। মধ্য লন্ডনে হতে যাওয়া ওই ব্রেক্সিট বিরোধী মিছিল ঘিরে ইংল্যান্ড ও ওয়ালসের সর্বত্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে পুলিশ বাহিনীকে।

6000

১৯ অক্টোবর ব্রেক্সিট নিয়ে আলোচনা করতে হাউজ অব কমনসের জরুরি অধিবেশনে বসতে যাচ্ছেন আইনপ্রণেতারা। ওই দিন পার্লামেন্টের বাইরে পিপলস ভোটের আহ্বানে এক মিছিলে ১০ লাখেরও বেশি মানুষ যোগ দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। পিপলস ভোট নামের সংগঠন জানিয়েছে, জলবায়ু আন্দোলনকারীরাও ১৫ দিনের চলমান আন্দোলনের শেষ মুহূর্তে ব্রেক্সিটবিরোধী মিছিলে যুক্ত হবেন।

পিপলস ভোট নামের সংগঠনটি মনে করছে, ব্রেক্সিট প্রশ্নে বরিস জনসনের নেতৃত্বাধীন কনজারভেটিভ সরকারের অবস্থান ভঙ্গুর। তারা মনে করছে, এ সংক্রান্ত সংকট নিরসনের সক্ষমতা জনসন কিংবা তার সরকারের নেই। তাদের মতে, ব্রেক্সিট নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার জনগণের হাতে ছেড়ে দেওয়া উচিত। সেই বার্তাটি সামনে আনতেই ১৯ তারিখের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে তারা।

লন্ডন পুলিশের কেন্দ্রীয় দফতর সূত্র নিশ্চিত করেছেন, এটা বড় ধরনের কর্মসূচি হতে যাচ্ছে। এই বৃহৎ কর্মসূচিকে ঘিরে সহায়তার জন্য সারা যুক্তরাজ্যে পুলিশ মোতায়েনের দায়িত্ব জাতীয় পুলিশ সমন্বয় কেন্দ্র’র (এনপিওসিসি)। এজন্য এনপিওসিসি’র সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে।

১৯ অক্টোবরের মিছিলে পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার লরেন্স টেইলর বলেন, ‘কর্মসূচিতে কী ঘটতে পারে তা আমরা বিবেচনা করছি। আমাদের যে পুলিশ বাহিনী আছে, তার ভিত্তিতে আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করব। যুক্তরাজ্য পুলিশ ও মেট্রোপলিটনের যথেষ্ট সক্ষমতা আছে। সক্ষমতা প্রয়োগের প্রয়োজন হলে অবশ্যই আমরা তা প্রয়োগ করব।’

প্রচারণা সংগঠনটির যোগাযোগ বিষয়ক পরিচালক টম বাল্ডউইন বলেন, ‘পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশন সত্ত্বেও পার্লামেন্ট স্কোয়ারে আমাদের মিছিল করার অনুমতির সংকেত দিয়েছে মেট্রোপলিটন। যেখানে জলবায়ু আন্দোলনকারীরাও যুক্ত হবেন।’

এর আগে ব্রিটেনের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় কর্মসূচি ছিল ২০০৩ সালের ইরাক যুদ্ধবিরোধী মিছিল। সর্বশেষ পিপলস ভোটের মিছিল হয়েছে প্রায় ছয় মাস আগে। তাতে ১০ লাখের অধিক মানুষ যুক্ত হন।

বাল্ডউইন বলেন, ‘মনে হচ্ছে এটা হবে খুব, খুব বৃহৎ কর্মসূচি। কোনও সন্দেহ নেই যুক্তরাজ্যের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আন্দোলনের একটি দেখতে যাচ্ছে লন্ডন।’

আগামী সপ্তাহের ওই মিছিলের জন্য রাজধানীতে ১৭২টি কোচ বুক করা হয়েছে, যেগুলো রাজধানীর বাইরে থেকে কর্মী আনা নেওয়ার কাজে ব্যবহৃত হবে। ওই সংগঠনের প্রচারের সময় ব্যাপক সংখ্যক ব্যক্তি মিছিলে আসার জন্য নাম নিবন্ধন করেছেন। মিছিলের আয়োজনের জন্য ইতোমধ্যে ৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকার (৫ লাখ পাউন্ড) তহবিল সংগ্রহ করা হয়েছে।

বাল্ডউইন আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন চান, রাজনীতিবীদ বনাম জনগণের প্রচারাভিযান একসঙ্গে চলুক। শনিবার পার্লামেন্টের ভিতরে প্রধানমন্ত্রীসহ রাজনীতিবীদরা ব্রিটিশদের ব্রেক্সিট গঠনের জোর চেষ্টা চালাবেন। আর বাইরে জনগণ চুড়ান্ত সিদ্ধান্তের দাবিতে মিছিল করবেন।’

তবে এখনও পরিষ্কার নয় যে, জলবায়ুকর্মী ১৯ অক্টোবর ওই আন্দোলনে যুক্ত হবে কিনা। কারণ ওই দিন তাদের আন্দোলনের ১৩তম দিন। গত মঙ্গলবার শুরু হওয়া আন্দোলন থেকে তাদের ১১০০ কর্মী ইতোমধ্যে গ্রেফতার হয়েছে। জলবায়ু আন্দোলনের মুখপাত্র জানিয়েছে, তারা আরও এক সপ্তাহ ওই আন্দোলন চলমান রাখবে।