এক যুগ পর সৌদি সফরে পুতিন

দীর্ঘ এক যুগ পর যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত সৌদি আরব সফরে গেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর আগে সর্বশেষ ২০০৭ সালে দেশটি সফরে গিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট। সোমবার রিয়াদের বিলাসবহুল রাজপ্রাসাদ আল ইয়ামামাহ প্যালেসে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান সৌদি রাজা সালমান ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস)।noname
এমন সময়ে পুতিন সৌদি সফরে গেলেন যার কিছুদিন আগে দেশটির দুই তেল স্থাপনায় হামলার পর ব্যাপক উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে রিয়াদ। ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর দুই তেল স্থাপনায় চালানো ওই হামলার পর সৌদি আরবের তেল উৎপাদন অর্ধেকে নেমে আসে। এরপরই ইরানের সঙ্গে আলোচনার ব্যাপারে মধ্যস্থতা করতে পাকিস্তান ও ইরাকের শরণাপন্ন হন এমবিএস নামে পরিচিত সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। সৌদি-ইরান বিরোধে মধ্যস্থতার ১৩ অক্টোবর তেহরান পৌঁছেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এর একদিনের মাথায় ১৪ অক্টোবর তেহরানের ঘনিষ্ঠ মিত্র রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে নিজ দেশে স্বাগত জানান সৌদি রাজা ও যুবরাজ।

সোমবার কিং খালিদ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে অবতরণের পর পুতিনকে স্বাগত জানান রিয়াদের গভর্নর প্রিন্স ফয়সাল বিন বন্দর। পরে তাকে রাজপ্রাসাদ আল ইয়ামামাহ প্যালেসে নিয়ে যাওয়া হয়। তার এ সফরে দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। আলোচনায় ঠাঁই পাবে ইরান ইস্যু। উঠে আসবে সিরিয়া ও ইয়েমেনসহ মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি।

এ সফরের প্রাক্কালে রবিবার এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে পুতিন বলেন, সৌদি নেতৃত্বের সঙ্গে তার চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে। তার ভাষায়, ‘সৌদি আরবকে আমরা একটি বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করি। দেশটির রাজা ও যুবরাজ উভয়ের সঙ্গেই আমার চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে।’ দুই দেশের সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন রুশ প্রেসিডেন্ট।

পুতিনের এ সফরের কিছুদিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস জানায়, পাকিস্তানের মধ্যস্থতায় রাশিয়ার মিত্র ইরানের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনার পথে হাঁটছে সৌদি আরব। গত ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সৌদি আরব সফর করেন। এ সময় রিয়াদ ও তেহরানের মধ্যে মধ্যস্থতার উদ্যোগ নিতে তাকে অনুরোধ করেন সৌদি যুবরাজ এমবিএস। যুবরাজ ইমরান খানকে বলেন, ‘আমি যুদ্ধ এড়াতে চাই।’ নিউ ইয়র্কে সাম্প্রতিক জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের সাইডলাইনে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেছেন পাকিস্তানি নেতা। রিয়াদের পক্ষ থেকে ইরাককেও অনুরোধ করা হয়েছে; তারাও যেন এ ব্যাপারে ইরানি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে।

এখন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান যখন তেহরানে অবস্থান করছেন; সে সময়েই সৌদি সফরে গেলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে একই সময়ে দুই নেতার এমন সফর কাকতালীয়; নাকি এর সঙ্গে সৌদি-ইরান বিবাদ নিরসন প্রচেষ্টার কোনও যোগসূত্র রয়েছে তা সময়ই বলে দেবে। সূত্র: আরব নিউজ, আল জাজিরা।