আল আকসা মসজিদে ইসরায়েলি হানা

ইসরায়েলি পুলিশের সহায়তায় রবিবারও শত শত অবৈধ ইহুদি বসতি স্থাপনকারী জেরুজালেমের পবিত্র আল আকসা মসজিদে প্রবেশের চেষ্টা করে। সে সময় মসজিদে নামাজরত ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনীর সংঘর্ষ হয়েছে। ফিলিস্তিনের একটি সূত্র জানিয়েছে, রবিবার (২০ অক্টোবর) সুকোট ছুটি উপলক্ষ্যে ইহুদি ধর্মাবলম্বীরা মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রবেশের চেষ্টা করলে সংঘাত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।  

thumbs_b_c_68a9bafa52dbd4a79aa65a0b45c33295

আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণটি একইসঙ্গে মুসলিম ও ইহুদিদের জন্য পবিত্র স্থান বলে বিবেচিত হয়। মুসলিমরা একে আল হারাম আল শরিফ নামে ডেকে থাকেন। আর ইহুদিরা এ স্থানটিকে ডাকেন টেম্পল মাউন্ট নামে। ১৯৬৭ সালে যখন ইসরায়েল এই এলাকায় প্রবেশাধিকার পায় তখন শুধু মুসলিমরাই আল-আকসায় নামাজ পড়তে পারতো। দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় প্রার্থনার সুযোগ পেত ইহুদিরা। মেনে চলতে হতো অনেক নিয়ম। বিগত ৫০ বছরে এই চিত্র অনেকটাই পাল্টে গেছে। ইসরায়েল এখন আল আকসার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে ইসরায়েলি রাজনীতিবিদ ও ইহুদি সংগঠনগুলোর মসজিদ প্রাঙ্গণ পরিদর্শনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা হতে দেখা গেছে। ফিলিস্তিনিদের আশঙ্কা, ইসরায়েলি কট্টরপন্থীরা আল আকসা প্রাঙ্গণের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়।

জেরুজালেমে বসতি স্থাপনকারী ইহুদিরা এক সপ্তাহব্যাপী সুকোট ছুটি উদযাপন করছেন। বিগত কয়েকদিনের ধারাবাহিকতায় রবিবার ছুটির শেষ দিনে তারা আবারও আল আকসা মসজিদ প্রবেশের চেষ্টা করে। জেরুজালেমে মুসলিম ও খ্রিস্টানদের পবিত্র স্থানগুলোর তদারকিতে নিয়োজিত জর্ডানের সংস্থা এজেন্সি রিলিজিয়াস এন্ডোমেন্টস অথরিটি সূত্র জানিয়েছে, ‘রবিবার সকালে আল আকসা মসজিদ প্রাঙ্গনে ইসরায়েলি পুলিশের সহায়তায় ৬৫৩ ইহুদি জোরপূর্বক প্রবেশ করে।’ এরপরই সেখানে ইসরায়েলি পুলিশের সঙ্গে ফিলিস্তিনি প্রার্থনাকারীদের সংঘর্ষ হয়।

স্থানীয়রা জানিয়েছে, মসজিদ প্রাঙ্গনের একটি প্রবেশ দরোজার কাছে প্রার্থনাকারীদের ওপর আক্রমণ করেছে ইসরায়েলি পুলিশ।

১৯৬৭ সালের আরব যুদ্ধের পর থেকে ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেম দখল করে রেখেছে। পূর্ব জেরুজালেমকে নিজেদের অবিভাজ্য রাজধানী বলে দাবি করে থাকে ইসরায়েল। অবশ্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পূর্ব জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। তবে যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশ সম্প্রতি জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ১৯৬৭ সালের পর পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে শতাধিক বসতি স্থাপন করেছে ইসরায়েল। পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমে স্থাপিত প্রায় ১৪০টি বসতিতে ৬ লাখেরও বেশি ইসরায়েলি বসবাস করে। আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় এ বসতি স্থাপনকে অবৈধ বলে বিবেচনা করা হলেও ইসরায়েল তা মানতে চায় না।