ইরাকে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চান শিয়া নেতারা

ইরাকের জনগণের স্বার্থরক্ষা ও তাদের প্রধানমন্ত্রী আবদুল মাহদিকে অপসারণে সম্মত হয়েছেন দেশটির শিয়া ধর্মীয় নেতা মুকতাদা আল সদর ও আল আমিরি। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) যৌথ এক বিবৃতিতে বলা হয়, তীব্র আন্দোলনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগে অস্বীকৃতি জানানোর পর তার অপসারণের বিষয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার অঙ্গীকার করেন ওই দুই নেতা। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।

c8027a7f98f5410c88958626059c9be7_18

কর্মসংস্থান সংকট, নিম্নমানের সরকারি সেবা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে অক্টোবরের শুরু থেকে বাগদাদের রাজপথে নামেন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। প্রথমে তারা রাজধানীতে বিক্ষোভ করলেও পরে তা আরও কয়েকটি শহরে ছড়িয়ে পড়ে। এক বছর আগে প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদুল মাহদি ক্ষমতা গ্রহণের পর এটাই দেশজুড়ে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ। বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ২৫০ জন নিহত হওয়ার খবর জানা গেছে। হতাহতের ঘটনায় পার্লামেন্টের বড় জোটের নেতা মুকতাদা আল সদর প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগের আহ্বান জানান। পরে পদত্যাগে অস্বীকৃতি জানান প্রধানমন্ত্রী।

মাহদি পদত্যাগে অস্বীকৃতি জানানোর পর প্রধানমন্ত্রীকে অপসারণে তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হাদি আল আমিরিকে সহায়তার আহ্বান জানান মুকতাদা। পরে প্রধানমন্ত্রীকে অপসারণে তার প্রধান দুই সমর্থক (মুকতাদা ও আমিরি) সম্মত হন। আল আমিরিকে উদ্ধৃত করে ইরাকের সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আমরা ইরাকি জনগণের স্বার্থ রক্ষায় ও জনস্বার্থের বিবেচনায় জাতিকে রক্ষা করতে একসঙ্গে কাজ করবো।’

এর আগে মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) মুকতাদা এক টুইট পোস্টে বলেন, ‘আমি আশা করি আপনি আপনার মর্যাদা অক্ষুন্ন রেখে বিদায় নেবেন।তবে আপনি অস্বীকার করলে আমি হাদি আল আমিরিকে আহ্বান জানাবো আপনাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে অপসারণে সহায়তা করতে।’

আল আমিরি হলেন ইরান সমর্থিত শিয়া জোটের নেতা। পার্লামেন্টে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসন রয়েছে এই জোটের। আর মুকতাদা আল সদরের জোটের রয়েছে সর্বোচ্চ আসন। এই দুই জোট প্রধানমন্ত্রীকে অপসারণে যৌথভাবে কাজ করবে বলে জানিয়ে মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) এক যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন তারা।

এক বছর আগে কয়েক সপ্তাহের রাজনৈতিক অচলাবস্থার মধ্যে ক্ষমতা গ্রহণ করেন মাহদি। ওই সময় নির্বাচনে সরকার গঠনের জন্য পর্যান্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি মুকতাদা ও আমিরির জোট। সে সময় মাহদিকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন তারা।

চূড়ান্ত রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী আবদুল মাহদি বলেন, ‘আমি একতরফা নির্বাচন আহ্বান করতে পারি না। এটা ভেঙে দিতে পার্লামেন্টকে অবশ্য ভোট দিতে হবে, যেখানে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন।’