যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে পক্ষ নিলেন ট্রাম্প, ক্ষুব্ধ করবিন

ব্রেক্সিট ইস্যুতে নানা বিতর্কের পর আগামী ১২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্যে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন। নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি পাঁচ বছর পর নির্বাচনের কথা থাকলেও গত পাঁচ বছরের কম সময়ের মধ্যে এটি দেশটিতে তৃতীয় সাধারণ নির্বাচন। ধারণা করা হচ্ছে, নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বর্তমান ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টি এবং প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির মধ্যে। দুই দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন যথাক্রমে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং অপেক্ষাকৃত বামপন্থী হিসেবে পরিচিত জেরেমি করবিন। তবে এ নির্বাচনে ইতোমধ্যেই নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন যুক্তরাজ্যের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার মতে, এই সময়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বরিস জনসনই উপযুক্ত ব্যক্তি। তার প্রতিদ্বন্দ্বী লেবার নেতা জেরেমি করবিন নির্বাচিত হলে যুক্তরাজ্য বরং অবনতির দিকে যাবে।noname
ব্রিটিশ নির্বাচন নিয়ে ট্রাম্পের এমন অবস্থানে স্বভাবতই ক্ষুব্ধ জেরেমি করবিন। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন তা নিয়ে তাই ট্রাম্পকে মাথা না ঘামানোর পরামর্শ দিয়েছেন এ রাজনীতিক। আর মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রতি ‘কৃতজ্ঞতা’ জানালেও ট্রাম্পের জোটগত নির্বাচন সংক্রান্ত এক প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন বরিস জনসন।

যুক্তরাজ্যের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে সর্বশেষ রবিবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ট্রাম্প। এ সময় তিনি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশটির দুই কট্টর ডানপন্থী রাজনীতিককে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। ওই দুই রাজনীতিক হলেন যুক্তরাজ্যের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও কনজারভেটিভ নেতা বরিস জনসন এবং ব্রেক্সিট পার্টির নেতা নাইজেল ফারাজ। ব্রেক্সিট ইস্যুতে ডানপন্থী এ দুই রাজনীতিকের অবস্থান মোটাদাগে অভিন্ন। দুইজনই যত দ্রুত সম্ভব ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যকে বের করে নিতে চান।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ব্রেক্সিট কার্যকরের মাধ্যমে যুক্তরাজ্য আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগের পর ওয়াশিংটন ও লন্ডনের মধ্যকার সম্প্রসারিত বাণিজ্যিক সম্ভবনার সুরক্ষায় এ দুই নেতার ঐক্যবদ্ধ থাকা প্রয়োজন।

সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, বরিস জনসন ও নাইজেল ফারাজ; উভয়েই আমার বন্ধু। তবে এই মুহূর্তে বরিস জনসনই যথার্থ ব্যক্তি।

যুক্তরাজ্যের আসন্ন নির্বাচনে কাকে সমর্থন দেবেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেন, তাদের দুইজনকেই আমি পছন্দ করি। আমি মনে করি বরিস জনসনই ঠিক আছে। উভয়েই আমার বন্ধু। আমি বলতে চাইছি, তাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত। আমি মনে করি এমন সম্ভাবনা রয়েছে।

ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে অব্যাহত বাণিজ্য সহজীকরণের জন্য ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের প্রস্থান অবশ্যই কাঠামোগত হতে হবে। দেশটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে বেরিয়ে আসতে হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের চেয়ে আমরা তাদের সঙ্গে আরও অনেক বেশি ব্যবসা করতে পারি।

যুক্তরাজ্যের আসন্ন নির্বাচনে জনসন ও ফারাজকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে ট্রাম্পের আহ্বান এটাই প্রথম নয়। এর আগে সাম্প্রতিক এক রেডিও অনুষ্ঠানে ব্রেক্সিট পার্টির নেতা নাইজেল ফারাজের সঙ্গে ট্রাম্পের আলাপচারিতায় দুই দলের এক হয়ে লড়াই করার প্রসঙ্গ উঠে এসেছিল। ট্রাম্প ও নাইজেল দুইজনই জোটগত লড়াইয়ের পক্ষে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন। ট্রাম্প বলেন, বরিস জনসন এই সময়ে যুক্তরাজ্যের জন্য উপযুক্ত প্রধানমন্ত্রী এবং যদি ব্রেক্সিট পার্টি জনসনের সঙ্গে জোট বাধে তাহলে তারা হবে অপ্রতিরোধ্য। পরে সেই প্রসঙ্গ টেনে ‘এই উপদেশের জন্য কৃতজ্ঞতা’ প্রকাশ করেন জনসন। তবে নাইজেল ফারাজের সঙ্গে জোটগত নির্বাচনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন বরিস জনসন। সূত্র: রয়টার্স, আল জাজিরা।