লেবাননে পুরুষতান্ত্রিকতার বিরুদ্ধে অধিকার আদায়ে সোচ্চার নারীরা

লেবাননে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার মধ্যে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করছে নারীবাদী জোট। দেশটির প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পর নতুন সরকারে নারীর ভূমিকা প্রতিষ্ঠায় তারা তৎপর। সাদ হারিরির পদত্যাগের দাবিতে চলা আন্দোলনে নারীদের স্লোগান দিতে, রাস্তা অবরোধ করতে ও দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতি নিয়ে বিতর্ক করতে দেখা গেছে। বুধবার (৬ নভেম্বর) রাতে রাজধানী বৈরুতের রাস্তায় ‘ওহ পুরুষতান্ত্রিক শক্তি, নারীর অধিকার শুধু পাদটীকা নয়’ বলে শ্লোগান দিয়েছেন নারীরা। তারা সমাজে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে সোচ্চার।

3500

২০১৯ সালের ১৭ অক্টোবর হোয়াটসঅ্যাপ এবং একই ধরনের অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপসগুলোতে কর আরোপ প্রস্তাবের প্রতিবাদ জানিয়ে লেবাননে বিক্ষোভ শুরু করে আন্দোলনকারীরা। এই প্রতিবাদের সঙ্গে যুক্ত হয় অর্থনৈতিক সংকট, বৈষম্য ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানুষের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ। হোয়াটসঅ্যাপে কর বাতিলের আন্দোলন পরিণত হয় তীব্র সরকারবিরোধী আন্দোলনে। জনগণের ক্রয় ক্ষমতা কমে যাওয়া ও জীবনমানের অবনতির জন্য সরকারের পদত্যাগের দাবিতে তীব্র বিক্ষোভের ১৩ দিন পর দায়িত্ব ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি।

মানবাধিকারকর্মী রান্দ হ্যামমাউড বলেন, ‘রাস্তায় আন্দোলনে যেতে লেবাননের নারীরা ভীত নয়। আমাদের ওপর যখন টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়েছিল তখনও ভীত ছিলাম না, ভবিষ্যৎ লেবানন গঠনে আমাদের অধিকারকে চ্যালেঞ্জ করলে তখনও আমরা ভীত হব না। লেবাননের সুশীল সমাজে নারীবাদী জোটের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।’

যৌন হয়রানি করতে লেবাননের নারীদের ফোন নম্বারসহ ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশের অভিযোগ রয়েছে। এমন বাস্তবতায় অনেকেই আশা করেন, চলমান আন্দোলন একটি আইনি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করবে। যা লেবাননে নারীর বিরুদ্ধে বৈষম্যের সংস্কৃতি দূর করবে।

হ্যামমাউদ বলেন, ‘(লেবাননে) যৌন হয়রানিকে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী আইনিভাবে সংজ্ঞায়িত ও অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি। বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ ও হেফাজত সম্পর্কিত বিদ্যমান সব আইন পুরুষের পক্ষে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগেই শুধু এই পরিস্থিতির অবসান হচ্ছে না। এটি লেবাননের সম্পূর্ণ অন্যায় ব্যবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা মাত্র।’