বাবরি মসজিদের রায় মোদির ধর্মান্ধ আদর্শের প্রতিফলন: পাকিস্তান

বাবরি মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির নির্মাণে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পাকিস্তান। শনিবারের ওই রায়ের পর বিষয়টি কথা বলেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মোহাম্মদ কুরেশি। তার ভাষায়, ‘বাবরি মসজিদের রায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ধর্মান্ধ আদর্শের প্রতিফলন।’বাবরি মসজিদ ভাঙ্গার সেই মুহূর্ত
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতে মুসলমানদের এমনতেই বহু চাপের মধ্যে বসবাস করতে হচ্ছে। এখন এ রায় তাদের আরও চাপের মধ্যে ফেলে দেবে।

ভারতের শিখ ধর্মাবলম্বীদের জন্য যে দিনটিতে কর্তারপুর করিডোর খুলে দিচ্ছে পাকিস্তান; সেই উৎসবমুখর দিনে এমন রায়ের সমালোচনা করেন শাহ মোহাম্মদ কুরেশি। তার প্রশ্ন, এমন রায়ের জন্য এই সময়টিকেই কেন বেছে নেওয়া হলো?

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মোদির ধর্মান্ধ আদর্শ ও সংকীর্ণতা কর্তারপুরের চেতনাকেই ধ্বংস করে দিয়েছে।

ভারতীয় আদালতের রায় অনুযায়ী, বাবরি মসজিদের ২ দশমিক ৭৭ একর জমি রাম মন্দির নির্মাণের জন্য দেওয়া হবে। ওই জমির বদলে অযোধ্যার অন্য কোথাও মসজিদ নির্মাণের জন্য মুসলমানদের পাঁচ একর জমি দেওয়া হবে। তবে এ রায়ে অসন্তোষ জানিয়েছে মুসলিমরা। অল ইন্ডিয়া মজলিস-এ-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন ও লোকসভার এমপি আসাদুদ্দিন ওয়াইসি বলেছেন,মুসলমানদের দানের জমির কোনও প্রয়োজন নেই। জামায়াতে ইসলামী হিন্দ-এর আমির সৈয়দ সাদাতুল্লাহ হুসাইনি বলেছেন, এ রায়ে ভারতের মুসলমানরা সন্তুষ্ট নয়। তবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার তাগিদ দিয়েছেন তিনি।

অযোধ্যায় মুঘল আমলে নির্মিত বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলার পর ভারতে মুসলিমবিরোধী দাঙ্গায় কমবেশি দুই হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়। মসজিদটির জমির মালিকানা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সেটি গুঁড়িয়ে দেয় কট্টরপন্থী হিন্দুরা। তাদের দাবি, বাবরি মসজিদের জায়গাতেই ভগবান রামের জন্ম হয়েছিল। রাম মন্দির ভেঙে সেখানে মসজিদ তৈরি করা হয়েছিল। তবে মুসলিমরা বলছেন, মন্দির ভেঙে মসজিদ তৈরির কোনও প্রমাণ নেই। তাদের দাবি, ১৯৯২ সালের ডিসেম্বরে বলপূর্বক ঐতিহাসিক মসজিদটি ভেঙে দেয় উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। তাই সেখানে মসজিদটি পুনঃস্থাপনই যৌক্তিক। পরে বিষয়টি আদালতে গড়ায়। শনিবারের রায় ভারতজুড়ে ব্যাপক ধরপাকড় চালানো হয়। আটক করা হয়েছে অর্ধসহস্রাধিক মানুষকে। নজরদারি বাড়ানো হয়েছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে। সূত্র: দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন, এনডিটিভি।