‘ইরানি সুন্দরী’ কে আশ্রয় দিলো ফিলিপাইন

ইরানি বিউটি কুইন বাহারে জারে বাহারিকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিলো ফিলিপাইন। ম্যানিলার বিমানবন্দরে চার সপ্তাহ ধরে আটকে থাকার পর তার আবেদন গ্রহণ করে দেশটির সরকার।তার বিরুদ্ধে ইরানের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর থেকেই সেখানে আটকা পড়ে ছিলেন তিনি।

Bahareh-Zare-Bahari-Facebook

২০১৮ সালের মিস ইন্টারকন্টিনেন্টাল প্রতিযোগিতায় ইরানের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন বাহারেহ জারে বাহারি নামের ওই নারী। ২০১৪ সাল থেকে ফিলিপাইনে বাস করেন বাহারি। তার দাবি, ইরান সরকার তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছে।

এর আগেই হোয়াটসঅ্যাপে দেওয়া সাক্ষাতকারে বাহারি বলেন, ২০১৪ সাল থেকে তিনি ইরানে যাননি। ফলে তার এমন কোনও অপরাধ করার প্রশ্নই আসে না যেখানে ইরানি ইন্টারপোল তার বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করতে পারে।  গত মাসে তিনি ডেইলি টেলিগ্রাফকে দেওয়া সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, এটা যে ভুয়া আমি সেটা প্রমাণ করতে পারবো। কারণ আমি ২০১৪ সাল থেকে ইরানে যাইনি। কোনও অপরাধ করতে হলে তো আমার সেখানে থাকতে হবে। আমার মনে হয় এটা যে মিথ্যা মামলা সেটা প্রমাণের জন্য এই তথ্যই যথেষ্ট।

তিনি বলেন, ইন্টারপোল এর আগেও দুটি চিঠি পাঠিয়েছে। কিন্তু তারা গ্রেফতারের স্পষ্ট কোনও কারণ বলেনি। তার অভিযোগ রাজনৈতিক কারণে তাকে বন্দি করতে চাইছে ইরান।  তিনি বলেন, ইরান সরকার ইন্টারপোলৈর সাথে প্রতারণা করছে। আপনি জানেন সরকারের জন্য একটি ভুয়া মামলা তৈরি করা খুবই সহজ। তারপর সেটা ইন্টারপোলকে অনুরোধ করে চিঠি পাঠাতেই পারে তারা। 

এর আগে অক্টোবরের শুরুর দিকে ফিলিপাইন অভিবাসন কর্মকর্তারা বাহারিকে ইরানে পাঠানোর চেষ্টা করেছিলেন। বাহারি বলেন, তিনি ২৯ সেপ্টেম্বর দুবাই যাওয়ার সময় কোনও সমস্যা হয়নি। কিন্তু যখন ৭ অক্টোবর ফিরে আসার সময় তার পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া এবং ইরানে পাঠানোর কথা বলা হয়। কারণ তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোরের রেড নোটিশ ছিলো।

তখনই সাথে সাথে মাটিতে বসে যান বাহারি। তখন সবার নজরে আসেন। তিনি চিৎকার করতে থাকেন। আামকে নিয়ে গেলে ২১ থেকে ২৫ বছরের জেল হবে আমার। আমাকে মেরেও ফেলা হতে পারে।’

এরপর বাহারির বন্ধুরা জাতিসংঘে বিষয়টা অবহিত করে। তাদের হস্তক্ষেপেই তার প্রত্যর্পণ স্থগিত হয়। এরপর থেকে ম্যানিলার নিনোয় আকিনো বিমানবন্দরে আটকা পড়ে আছেন তিনি। তার রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন এখনও প্রক্রিয়াধীন।  আগামী সপ্তাহে তার আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানি হবে বলে জানান তিনি।

এই চার সপ্তাহ বিমানবন্দরে কেমন কেটেছে সেটা জানাতে গিয়ে আল-আরাবিয়াকে দেওয়া সাক্ষাতকারে বাহারি বলেন, ‘বিমানবন্দর কর্তারা তার সঙ্গে ভালো আচরণ করছেন। তবে কিছু সুযোগ-সুবিধা কম রয়েছে। আমি এখন পর্যন্ত গোসল করতে পারিনি। বিমানবন্দরের তৃতীয় তলায় যেখানে গোসলের জায়গা সেখানে তার যাওয়ার অনুমতি নেই।

বাহারি বলেন, তিনি ইরানি জনগণ ও বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের সমর্থন পাচ্ছেন। তবে তার বিরুদ্ধে জারিকৃত পরোয়ানা এখনও মুছে ফেলা হয়নি।  তিনি বলেন,  ‘শুধু আমার সাথেই নয়। আমি ইরানি জনগণের হয়ে সারাবিশ্বকে বার্তা পৌছে দিচ্ছি। আমরা কোনও সন্ত্রাসী শাসন চাই না। ইরানি জনগণ সবদেশের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক চায়। তিনি বলেন, আমি যখন দেশ ছেড়ে চলে আসি তখন আমি জনগণের হয়ে কথা বলি। বিশেষ করে নারীদের। আমি সবসময়ই আমার এই আওয়াজ আরও জোরালো করতে চাই। আমি চাই আমার দেশের স্বাধীনতা ও সমতা প্রতিষ্ঠা হোক।