স্বায়ত্তশাসন বাতিলের ১০০ দিন পর কতটা স্বাভাবিক কাশ্মির!

ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের রাজ্যের মর্যাদা ও স্বায়ত্তশাসন বাতিল করে অঞ্চলটিকে দুই টুকরো করার দিন থেকেই সেখানে নিষেধাজ্ঞা জারি করে দিল্লি। মঙ্গলবার এই নিষেধাজ্ঞার ১০০ দিন পূর্ণ হলো। এই তিন মাসের কিছুটা বেশি সময়ে নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল করা হলেও সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি।
শীর্ষ রাজনৈতিক নেতারা এই ১০০ দিন ধরেই আটক হয়ে আছেন। জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা। ৩৬ লাখ প্রিপেইড মোবাইল এখনও চালু হয়নি। নেই ইন্টারনেটও। তবে চালু হয়েছে ল্যান্ডলাইন ফোন আর পোস্ট পেইড মোবাইল ফোন। ইন্টারনেট চালুর দাবিতে মঙ্গলবারই শ্রীনগরে বিক্ষোভ করেছেন সেখানকার সাংবাদিকরা।

অগাস্টের ৫ তারিখের সঙ্গে ১০০ দিন পরের কাশ্মিরের সব থেকে বড় তফাৎটা হল তখন যে জম্মু-কাশ্মির রাজ্যটা ছিল, আনুষ্ঠানিকভাবে সেটাই এখন আর নেই। আনুষ্ঠানিক মানচিত্রও বদলে গেছে এই ১০০ দিনে। লাদাখ অঞ্চলকে আলাদা করে দিয়ে জম্মু-কাশ্মিরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল বলে ঘোষণা করা হয়েছে। তাই প্রশাসন পুরোটাই দিল্লি থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়।

ধরপাকড়ের তালিকায় শুধু কাশ্মিরের স্বাধীনতাকামীরাই নয়; এমনকি অঞ্চলটির ভারতপন্থী শীর্ষ রাজনৈতিক নেতারাও আটক হয়ে আছেন। ১০০ দিনেও আটক অবস্থা থেকে মুক্তি মেলেনি অঞ্চলটির ভারতপন্থী সাবেক মুখ্যমন্ত্রীদের। আর সাধারণ মানুষের ওপর ধরপাকড় তো স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে।

কাশ্মিরের প্রধান যে আয়ের উৎস, সেই পর্যটন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে আছে। পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল হাজার হাজার মানুষের কোনও রোজগার নেই। প্রথম দিকে যে রকম কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল রাস্তায় চলাচলের ওপর, সেসব শিথিল করা হয়েছে। এখন শুধুমাত্র ১৪৪ ধারায় চারজনের বেশি একসঙ্গে চলাফেরার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। দোকানপাট, বাজার সকালে ঘণ্টা তিনেকের জন্য খোলা হয়। কাশ্মির থেকে বিবিসির সাংবাদিক রিয়াজ মাসরূর জানিয়েছেন, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ওই তিন ঘণ্টার মধ্যেই কিনতে হয়। মঙ্গলবার থেকেই ট্রেন চালু হয়েছে শ্রীনগর আর বারামুলার মধ্যে।

স্কুল খোলা আছে, তবে শুধু শিক্ষক শিক্ষিকারাই যান। ক্লাস টেন এবং টুয়েলভের যেহেতু বোর্ড পরীক্ষা আছে তাদের পরীক্ষাগুলো হচ্ছে। অন্য ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের বাড়িতে অভিভাবকদের সামনে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। এই নতুন রুটিনে মানুষ অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু মাঝে মাঝেই বিক্ষোভের মাধ্যমে এটা টের পাওয়া যায় যে, ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ এখনও বিন্দুমাত্র কমেনি। সূত্র: বিবিসি।