খোঁজ মিলছে না সৌদি রাজকন্যার

এ বছর মার্চে চিকিৎসার জন্য দেশ ছাড়ার কথা ছিল সৌদি রাজকন্যা বাসমাহ বিনতে সৌদের। তবে গত প্রায় ৮ মাস ধরে তার কোনও খোঁজ নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাসমাহ’র এক ঘনিষ্ঠজন জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার সময় মার্চেই তাকে আটক করা হয়। এখন তিনি বিনাবিচারে গৃহবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। তবে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সৌদি কর্তৃপক্ষ কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

Untitled-1 copy

বাসমাহ দীর্ঘদিন ধরেই সৌদি আরবের সাংবিধানিক সংস্কার এবং মানবাধিকার নিয়ে কথা বলে আসছেন। তার মতো রাজতন্ত্রের সমালোচকরা যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ক্রোধের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। রাজপরিবারের অনেকেই সমালোচনার কারণে যুবরাজের নির্দেশে হত্যা, গুম, কারাবন্দি ও হুমকির শিকার হয়েছেন বলে বিভিন্ন সময় খবর প্রকাশিত হয়েছে৷

নিরাপত্তার স্বার্থে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজকন্যার ঘনিষ্ঠ একজন ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, বাসমাহ চাইলেও তার বক্তব্য প্রকাশ করতে পারছেন না, কেননা তার সব ধরনের যোগাযোগের ওপর নজরদারি চলছে। তার দাবি, চিকিৎসার জন্য রাজকন্যার সুইজারল্যান্ডে যাওয়ার কথা ছিল৷ কন্যাকে নিয়ে বিদেশ পালিয়ে যেতে পারেন এমন সন্দেহে চলতি বছরের মার্চে তাকে বন্দি করা হয়৷

ডয়চে ভেলের হাতে আসা নথি অনিযায়ী, সুইস ডাক্তারের অনুরোধের প্রেক্ষিতে ১৮ ডিসেম্বর বাসমাহ কন্যাসহ জেদ্দা ত্যাগের ছাড়পত্র পান৷তবে তার মার্কিন আইনজীবী লিওনার্ড বেনেট ওই সংবাদমাধ্যমকে জানান, ভ্রমণের দিনই তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে তাকে বিমান থেকে নামিয়ে আনা হয়৷ তিনি বলেন, ‘দুই মাস পর থেকে তার আর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। কেউ জানে না তিনি কোথায় আছেন। আমরা আসলে খারাপ কিছুর আশঙ্কা করছি।’

আইনজীবী বেনেট আরও জানান, ‘কয়েক দফা ফোন করার পর তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হলেও তিনি তেমন কিছু বলেননি৷ বাসমাহর কথা শুনে মনে হয়েছে তিনি বন্দি অবস্থায় রয়েছেন৷ তার গন্তব্য সুইজারল্যান্ডের জেনেভা হলেও, যাওয়ার কথা ছিল তুরস্ক হয়ে৷আঙ্কারার সাথে শত্রুতামূলক সম্পর্ক থাকায় রিয়াদ বিষয়টিকে সন্দেহের চোখে দেখেছে৷’

ডয়চে ভেলেকে বাসমাহর ঘনিষ্ঠ সূত্রটি জানিয়েছে, ‘(পালিয়ে যাওয়ার) অভিযোগ সত্য কিনা তারা (কর্তৃপক্ষ) সেই তদন্ত শেষ করেছে৷ তারপরও এখন পর্যন্ত কোনও জবাব পাওয়া যায়নি৷’ তিনি বলেন, বাসমাহর বিরুদ্ধে দেওয়া তথ্য মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে, তবে কেন এখনও তাকে আটকে রাখা হয়েছে সেটি তাদের জানা নেই৷