দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত হলেন নেতানিয়াহু

ঘুষ, জালিয়াতি ও আস্থা ভঙ্গের তিন মামলায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে অভিযুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল আবিচাই মান্দেলব্লিট। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দেশটির আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতি সাংবাদিকদের পড়ে শোনানোর মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন তিনি। এর আগে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুইটি দুর্নীতির মামলায় কয়েক মাসের তদন্তের পর গত ফেব্রুয়ারিতে তাকে অভিযুক্ত করার সুপারিশ করে পুলিশ। তবে শুরু থেকেই নেতানিয়াহু তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। 

Capture

কয়েক মাস ধরে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুটি দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শেষে ১৩ ফেব্রুয়ারি তাকে অভিযুক্ত করার সুপারিশ করে পুলিশ। কেস ১০০০ নামের প্রথম তদন্তে বলা হয়, নেতানিয়াহু রাজনৈতিক সুবিধা প্রদানের বিনিময়ে ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে উপহার নিয়েছিলেন। তাদের কাছ থেকে ২ লাখ ৮০ হাজার ডলার মূল্যের উপহার সামগ্রী গ্রহণ করেছেন নেতানিয়াহু। কেস ২০০০ নামে দ্বিতীয় তদন্তে বলা হয়, তেল আবিবের একটি পত্রিকার প্রকাশক আরনোন মোজেসকে ঘুষ দিয়ে ইতিবাচক সংবাদ প্রকাশের চেষ্টা করেছেন তিনি। ইসরায়েলি সংবাদপত্র ইয়েদিয়থ আহরনোথে নিজের পক্ষে ইতিবাচক সংবাদ প্রকাশের জন্য একটি চুক্তি করার চেষ্টা করেছিলেন নেতানিয়াহু। এর বিনিময়ে সংবাদপত্রটির প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষ ইসরায়েল হায়োমকে কোণঠাসা করতে সহায়তা করবেন বলে প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। আর কেস ৪০০০ এ বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীকে ঘুষ, প্রতারণা ও বিশ্বাস ভঙ্গের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে। নেতানিয়াহুর ইতিবাচক সংবাদ প্রচারের জন্য একটি টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানিকে সমর্থন করতে তার নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে চাপ দিয়েছিলেন তিনি। শেয়ারহোল্ডার নিয়ন্ত্রণ চুক্তির অংশ হিসেবে এটা করেন তিনি। এর বিনিময়ে ওই শেয়ারহোল্ডার ঘুষ গ্রহণ করেন।

বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির সব অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি দাবি করেছেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে একটি মহল তার বিরুদ্ধে এই ষড়যন্ত্র করছে। তিনি বামপন্থী বিরোধীদের ও  সংবাদমাধ্যমের ষড়যন্ত্রের শিকার।

গত এপ্রিল ও সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ার পর জোট সরকার গঠন করতে প্রধানমন্ত্রী ব্যর্থ হওয়ার পর রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে তার বিচারের ঘোষণা দিলো আইন বিভাগ। দুর্নীতি বিষয়ে কোনও ধরনের অন্যায় করেননি বলে দাবি করেছেন নেতানিয়াহু। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, ‘আমি পদত্যাগ করবো না এবং আইনগতভাবে এটা করতে আমি বাধ্য নই।’

বুধবার নেতানিয়াহুর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী গান্টজ সরকার গঠনে ব্যর্থ হওয়ার কথা ঘোষণার পর আগামী ২১ দিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী নির্বাচন করতে একমত হতে আইনপ্রণেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটি প্রেসিডেন্ট রুভেন রিভলিন।

এখন এটা পরিষ্কার নয় যে, নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী হবে। যতোক্ষণ তিনি অপরাধী সাব্যস্ত না হচ্ছেন ততোক্ষণ তার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনে আইনি বাধা নেই। এমনকি আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলেও আইনি প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।