হংকং-এর স্থানীয় নির্বাচনে ব্যাপক ভোটার উপস্থিতি

হংকং-এর স্থানীয় পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। স্থানীয় সময় রবিবার সকাল সাড়ে ৭টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। স্থানীয় নির্বাচন হলেও ইতোমধ্যেই ব্যাপক ভোটার উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। ইতোমধ্যেই হংকংজুড়ে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে হাজির হয়েছেন ১০ লাখেরও বেশি ভোটার। এবারের নির্বাচনকে অঞ্চলটির চীনপন্থী শাসক ক্যারি ল্যাম-এর জন্য একটি পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।noname
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছয় মাস ধরে হংকং-এ তীব্র চীনবিরোধী বিক্ষোভের মধ্যেই রবিবার এ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই নির্বাচনের বিজয়ী হওয়ার মাধ্যমে চীনকে একটি বার্তা দিতে চায় অঞ্চলটির গণতন্ত্রপন্থীরা। ভোটগ্রহণ কার্যক্রমে কোনও ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি না করতে তাই সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা। তারপরও আশঙ্কা করা হচ্ছে, শেষ পর্যন্ত সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে ভোটগ্রহণ কার্যক্রম স্থগিত হয়ে পড়তে পারে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছন, অল্প সংখ্যক পুলিশি উপস্থিতিতে ভোটগ্রহণ কার্যক্রম শুরু হয়। তবে দাঙ্গা পুলিশ কেন্দ্রগুলোতে পাহারা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে; এমন খবর বেরিয়েছে। সেক্ষেত্রে এ বাহিনীর ৩১ হাজার সদস্যের সবাইকেই নির্বাচনি দায়িত্বে মোতায়েন করা হবে।

পরে ঝামেলা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় আগেভাগেই ভোট দিতে এসেছেন ৪৫ বছরের তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী কেভিন লাই। তিনি বলেন, লোকজনের আশঙ্কা, হয়তো অনাকাঙ্ক্ষিত কোনও কারণে নির্বাচন বন্ধ হয়ে যাবে। কিছু প্রতিবাদও হতে পারে।

এবারের নির্বাচনে ৪৫৩টি আসনে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন রেকর্ড সংখ্যক এক হাজার ১০৪ জন প্রার্থী। প্রত্যেকেই প্রথমবারের মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মোট ভোটার সংখ্যা ৪১ লাখ ৩২ হাজার ৯৭৭ জন। হংকং-এর দীর্ঘ চীনবিরোধী বিক্ষোভের বাস্তবতায় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও এ নির্বাচনের স্বতন্ত্র তাৎপর্য রয়েছে।

কয়েক মাস ধরে চলা সরকারবিরোধী বিক্ষোভের ফলে হংকং-এ অস্থিরতা বিরাজ করছে। তবে চীনা নিয়ন্ত্রণাধীন আধা-স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চলটিতে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে সম্প্রতি সবচেয়ে বেশি সহিংসতা হয়েছে। কিছুদিন ধরে দফায় দফায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, বিক্ষোভ দমনে অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করছে পুলিশ। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ররিবার ভোটগ্রহণের সময় সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হলে তারা ভোট বাতিল করবেন।

আঞ্চলিক এ নির্বাচনে বিজয়ী কাউন্সিলরদের হাতে খুব বেশি ক্ষমতা থাকে না। কিন্তু এবারের নির্বাচন অন্য কারণে গুরুত্বপূর্ণ। জুনে শুরু হওয়া সরকারবিরোধী আন্দোলনের পর এটাই প্রথম নির্বাচন। ফলে একে অগ্নিপরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে। চীনবিরোধী বিক্ষোভকারীদের আশাবাদ তারা পরিষদে নিজেদের প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে পারবেন। অন্যদিকে চীনপন্থী নেতারাও সবার কাছে ভোট চাইছেন। এখনও এই পরিষদে তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে।

হংকং বাপ্টিস্ট ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক কেনেথ জান বলেন, ‘হংকংয়ের জনগণ নির্বাচনকে মত প্রকাশের আরেকটি মাধ্যম হিসেবে দেখছে।’