ইরাকে ফের ইরানি কনস্যুলেটে অগ্নিসংযোগ

ইরাকের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর নাজাফে অবস্থিত ইরানি কনস্যুলেটে ফের অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষোভকারীরা। এ নিয়ে সম্প্রতি তৃতীয় দফায় সেখানে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটলো। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাত দিয়ে বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি।12
গত ১ অক্টোবর থেকে কর্মসংস্থানের সংকট, নিম্নমানের সরকারি পরিষেবা এবং দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বাগদাদের রাজপথে নামেন কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী। নির্দিষ্ট কোনও রাজনৈতিক দলের অনুসারী না হয়েও রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে অনিয়মের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের আওয়াজ নিয়ে রাজপথে নামেন আন্দোলনকারীরা। নিরাপত্তা বাহিনী টিয়ার গ্যাস ও গুলি চালিয়ে তাদের ওপর চড়াও হলে এই বিক্ষোভ আরও জোরালো হয়ে ওঠে, ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন শহরে। বিশেষ করে শিয়া অধ্যুষিত দক্ষিণাঞ্চলীয় বেশ কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ ব্যাপক আকার ধারণ করে। কর্মসংস্থানের সংকট ও দুর্নীতির অভিযোগে বিক্ষোভ শুরু হলেও সেটি এখন সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। এর পাশাপাশি তারা ইরাকে বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলছে। তাদের আশঙ্কা, আঞ্চলিক প্রভাবের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যকার ক্রমবর্ধমান বিরোধের মাঝে পড়ে যেতে পারে বাগদাদ। 

নাজাফের ইরানি কনস্যুলেট ভবনটিতে এর আগে গত ২৮ নভেম্বর ও ১ ডিসেম্বর তারিখেও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষোভকারীরা। প্রথম দফায় ভবনটিতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার পর স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কারফিউ জারি করে। তাতেও বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীদের পরাস্ত করা যায়নি। আল জাজিরা জানিয়েছে, কনস্যুলেটে এমন অগ্নিসংযোগ আদতে ইরাকি বিক্ষোভকারীদের ইরানবিরোধী মনোভাবের জোরালো বহিঃপ্রকাশ।

এদিকে ইরাকের রাষ্ট্রীয় মানবাধিকার কমিশন জানিয়েছে, বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৩৪৬-এ দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ১৫ হাজারেরও বেশি মানুষ। এসব হতাহতের ঘটনায় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিবর্ষণকেই দায়ী করছে মানবাধিকার কমিশন। সূত্র: আল জাজিরা, আনাদোলু এজেন্সি।