সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীর পরিচয় যাচাই বাধ্যতামূলক করছে ভারত

জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যমগুলোর ব্যবহারকারীর পরিচয় যাচাই বাধ্যতামূলক করতে যাচ্ছে ভারত। এর মাধ্যমে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য, ফেক নিউজ, মানহানিকর পোস্ট ও দেশবিরোধী কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণে ব্যবহারকারীদের পরিচয় নিশ্চিত ও তথ্য প্রদর্শনের জন্য কোম্পানিগুলোকে কাজ করার প্রস্তাব দিতে যাচ্ছে দেশটির সরকার। ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা বিলে এমন নির্দেশনা রয়েছে বলে জানিয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

Capture

ভারতের প্রস্তাবিত নতুন ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বিলটির ফলে অনেক বড় বড় সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিকে পরিচয় যাচাই অপশন চালুর প্রস্তাবের প্রয়োজন পড়বে। গত বছর ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা বিলের খসড়া প্রকাশ্যে আসে। এটি বিলে পরিণত হওয়ার অপেক্ষায় আছে শীর্ষ তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি ও এই খাতের সংশ্লিষ্টরা। এর ফলে ভারতীয় গ্রাহকদের তথ্য স্থানান্তর, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণ করতে হতে পারে অধিকাংশ কোম্পানির। 

ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা বিলের সর্বশেষ খসড়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীর পরিচয় যাচাইয়ের শর্ত রয়েছে। ফেক নিউজের উৎস শনাক্ত করা, এনক্রিপশনের সুযোগ পাওয়া (এনক্রিপশন প্রক্রিয়ায় নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ ছাড়া আর কেউ তথ্যে প্রবেশ করতে পারে না), রাজনীতি ও নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করে এমন বিষয়, শিশু হয়রানি ও প্রতিশোধমূলক পর্নো চিত্র ছড়ানো বন্ধ করতে এমন শর্ত দেওয়া হয়।

তথ্য মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘ফেক নিউজ ছড়ানো ও অনলাইনে ট্রল বিস্তার হ্রাস করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার (৪ ডিসেম্বর) ভারতীয় মন্ত্রিসভায় ব্যক্তিগত গোপনীয়তার বিলটিতে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই এটি পার্লামেন্টে উত্থাপন করা হবে। তবে পাস হওয়াটা অল্প সময়ের মধ্যে নাও হতে পারে। কারণ পার্লামেন্ট এটিকে অধিকতর তদন্তের জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটি বা অন্য কোনও প্যানেলে পাঠাতে পারে।

গত বছর ইন্ডিয়াস্পেন্ড নামের একটি ওয়েবসাইট জানিয়েছে, দেশটিতে ২০১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত ভুয়া তথ্য ও গুজব ছড়িয়ে বিভিন্ন সহিংসতার ঘটনায় অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছে। এজন্য এসব সমস্যা মোকাবিলায় সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যমগুলোকে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। তবে এ বিষয়টির বিরোধিতা করেছে ফেসবুকসহ অন্য কোম্পানিগুলো। তারা বলছে, স্বেচ্ছামূলক পরিচয় যাচাই পদ্ধতিই বৈধ অ্যাকাউন্টের তথ্য যাচাইয়ে গ্রাহককে বেশি আস্থা দেবে। যদিও ভুয়া অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলা হবে না।