লোকসভার পর এবার রাজ্যসভায় ভারতের নাগরিকত্ব বিল

ভারতের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় দেশটির বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি) উত্থাপন করা হয়েছে। সোমবার রাতে লোকসভায় বিলটি পাসের পর বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাজ্যসভায় এটি উত্থাপন করেন বিজেপি প্রধান ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।noname
বিল উত্থাপন করে রাজ্যসভায় দেওয়া ভাষণে অমিত শাহ দাবি করেন, ‘ভারতীয় মুসলিমরা নিরাপদ আছে এবং ভবিষ্যতেও তারা নিরাপদ থাকবে।’

সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দিবাগত মধ্যরাতে ৩১১-৮০ ভোটে লোকসভার অনুমোদন পায় ‘দ্য সিটিজেনশিপ (অ্যামেন্টমেন্ট) বিল, ২০১৯’ শীর্ষক ওই বিতর্কিত বিল। অমুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিতে লোকসভায় এটি উত্থাপন করে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। বিলটিতে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে নিপীড়নের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পার্সি ও খ্রিস্টানদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বিলটিকে ‘মুসলিমবিরোধী’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।

এর আগেও একবার পার্লামেন্টে এ বিলটি পেশ করা হয়েছিল। তবে তখন সেটি পাস হয়নি। ওই সময়ে আসামসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলজুড়ে বিলটির বিরুদ্ধে তীব্র বিক্ষোভ হয়েছিল। এবারও বিলটি বিক্ষোভ-প্রতিবাদের মুখে পড়েছে।

বুধবার রাজ্যসভায় বিলটি পেশ করে অমিত শাহ বলেছেন, ‘মুসলিমদের উদ্বিগ্ন হওয়ার প্রয়োজন নেই। তারা দেশের (ভারত) নাগরিক ছিল এবং ভবিষ্যতেও নাগরিক হিসেবে থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘বিলটি মুসলিমবিরোধী বলে অনেকে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর চেষ্টা করছে। এটা শুধু পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য। এতে ভারতীয় মুসলিমদের কিছু করতে হবে না। অনুগ্রহ করে বিভ্রান্ত হবেন না। নির্ভয়ে বসবাস করুন।’

এর আগেও অমিত শাহ বলেছেন, শরণার্থী এবং অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে একটি মৌলিক পার্থক্য আছে। এই বিলটি শরণার্থীদের জন্য। ভোট ব্যাংকের রাজনীতি না করে চোখ, কান খুলুন। লাখ লাখ, কোটি কোটি মানুষ ভয়ঙ্কর জীবনযাপন করছেন, মৌলিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাদের সোনালি সূর্যের ভোর উপহার দেবেন। 

ভারতের ১৯৫৫ সালের মূল নাগরিকত্ব আইনে বলা হয়েছে,নাগরিকত্ব পেতে হলে দেশটিতে থাকতে হবে ১১ বছর। তা কমিয়ে এখন পাঁচ বছর করা হয়েছে। সংশোধিত বিলের উদ্দেশ্য প্রতিবেশী মুসলিম দেশগুলোর অমুসলিমদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া। তবে বিরোধীরা বলছেন,এই বিল মুসলিমদের প্রতি বৈষম্যমূলক। বিপরীতে মোদি সরকার বলছে, প্রতিবেশী দেশের ‘নিপীড়িত’ সংখ্যালঘুদের সহায়তা দিতে তারা দায়বদ্ধ।