ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘জাতিগত নিধনের’ চেষ্টা করছে সরকার: রাহুল গান্ধী

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের (সিএবি) মাধ্যমে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে জাতিগত নিধনের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দেশটির প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী। বিলটিতে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে নিপীড়নের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পার্সি ও খ্রিস্টানদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় বিলটি উত্থাপনের আগে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ক্ষমতাসীন দল বিজেপির তীব্র সমালোচনা করে নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ করেন তিনি।

রাহুল গান্ধী

সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে ৩১১-৮০ ভোটে লোকসভার অনুমোদন পায় ‘দ্য সিটিজেনশিপ (অ্যামেন্টমেন্ট) বিল, ২০১৯’ শীর্ষক ওই বিতর্কিত বিল। অমুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিতে লোকসভায় এটি উত্থাপন করে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। লোকসভায় পাস হওয়ার দুইদিন পর পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায়  বিলটি পেশ করেন বিজেপি প্রধান ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সংবাদমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থার কাছে বিলটি ‘মুসলিমবিরোধী’ আখ্যা পেয়েছে।

রাজ্যসভায় বিলটি নিয়ে বিতর্ক শুরুর আগে টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় রাহুল গান্ধী লিখেছেন, ‘উত্তর-পূর্বাঞ্চলে জাতিগত নিধন চালাতে মোদি-শাহ সরকারের একটি চেষ্টা হলো এই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি)। সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রা এবং ভারতের বৈশিষ্ট্যের ওপর এটা এক ধরনের ফৌজদারি আক্রমণ। আমি উত্তর-পূর্বের মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সংহতি জানাই এবং তাদের সেবায় নিয়োজিত থাকবো।’

কংগ্রেসের সাবেক এই প্রেসিডেন্ট আরেক টুইটবার্তায় লিখেছেন, ‘সিএবি-টা হচ্ছে ভারতীয় সংবিধানের ওপর একটি আঘাত। আর এটাকে সমর্থনের মানে হচ্ছে আমাদের জাতির মূলভিত্তিকে ধ্বংসের চেষ্টা ও আক্রমণে শামিল হওয়া।’

বিলটি লোকসভায় পাসের পর দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলে ব্যাপক বিক্ষোভ-প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। আসাম ও ত্রিপুরায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। পরে আগামী ৪৮ ঘণ্টার জন্য মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয় রাজ্য সরকার।