হিন্দু-শিখ বিক্ষোভকারীদের মানবশেকলে মুসলিমদের নামাজ আদায়

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নানান ধারার দৃষ্টান্ত স্থাপনের মধ্য দিয়ে ভারতের মুসলিমবিদ্বেষী নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করছে সে দেশের বিক্ষুব্ধ জনতা। সদ্য ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা গেছে, হিন্দুত্ববাদী ওই আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত মুসলিম সম্প্রদায়ের নামাজ আদায়ের জন্য সহযোদ্ধা হিন্দু-শিখ প্রতিবাদকারীরা মানবশেকল রচনা করেছে। এর আগে গতকাল কলকাতার মিছিলে শ্লোগান তোলা হয়: হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই, একসঙ্গে থাকতে চাই।

human-chain-feat

কেন্দ্রীয় সরকারের নাগরিকত্ব আইন নিয়ে দেশজুড়ে প্রতিবাদের আগুন জ্বলছে। বিরোধীরা তো বটেই, সব রাজ্যেই বিপুল সংখ্যক সাধারণ মানুষও দাবি করছে, এ আইন মেনে নেওয়ার মানে সাম্প্রদায়িকতাকে মেনে নেওয়া। রবিবার দিল্লির জামিয়া মিলিয়া এবং উত্তরপ্রদেশের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি আক্রমণের পর প্রতিবাদের ঢল নামে সারা দেশে।

সামাজিক মাধ্যম ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, দিল্লির জমিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মুসলিমরা জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করছেন, আর তাদের সুরক্ষা দিতে পাশে মানবশেকল তৈরি করেছেন হিন্দু ও শিখ সহযোদ্ধারা। ভিডিওটি প্রথম শেয়ার করেন ঐশ্বরিয়া পালিওয়াল নামে এক সাংবাদিক। ক্যাপশনে জমিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে হ্যাশট্যাগ করে তিনি লেখেন, ‘রাজধানীতে সিএএ ও এনআরসির বিরুদ্ধে বিক্ষোভের সময়কালীন দৃশ্য এটা।’ 

 

এরইমধ্যে জামিয়ার প্রতিবাদরত শিক্ষার্থীদের একটি ভিডিও মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে। সবাই শেয়ার করে ক্যাপশন দিতে থাকে, ‘এটাই আমাদের ভারত। পরষ্পরের জন্য আমরা এমনটাই করতে থাকবো।’

 

ইন্দার নামে একজন এই পোস্টটি শেয়ার দিয়ে বলেন, ভারত ধর্মনিরপেক্ষ তার সংবিধানের জন্য নয়। বরং এই দেশের মানুষের জন্য।


এর আগে বৃহস্পতিবার কলকাতাতেও বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে অহিংস প্রতিবাদের অনন্য নজির চোখে পড়ে। সেখানে শ্রেণি-ধর্ম-বর্ণগত পরিচয় ছাপিয়ে হাজার হাজার মানুষ হেঁটেছে এক মহামিছিলে। রাজনীতিক থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র নির্মাতা, বুদ্ধিজীবী-ছাত্রসমাজ থেকে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ এক কাতারে দাঁড়িয়েছে বিজেপি সরকারের মুসলিমবিরোধী অবস্থানের বিরুদ্ধে। ভারতীয় পরিচয়কে সামনে এনে তারা শ্লোগান তুলেছে হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের পক্ষে।  তাদের দাবি একটাই, জনবিরোধী ও বিভাজন সৃষ্টিকারী নাগরিকত্ব আইন বাতিল করতে হবে।