ভারতে অ্যামাজনকে রুখতে নতুন উদ্যোগ আম্বানির

ইন্টারনেটে কেনাকাটার জন্য নতুন অনলাইন শপিং পোর্টাল শুরু করতে যাচ্ছেন এশিয়ার শীর্ষ ধনী মুকেশ আম্বানি। তার প্রতিষ্ঠান রিল্যায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রির এই উদ্যোগ ভারতে ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজনকে চ্যালেঞ্জ জানাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

noname

মুকেশ আম্বানি একজন ভারতীয় ধনকুবের। ফোর্বস ম্যাগাজিনের হিসেব অনুযায়ী তার সম্পদের পরিমাণ ৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তিনি রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বৃহৎ শেয়ারের মালিক। এই প্রতিষ্ঠানের আওতায় যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে জিওমার্ট নামের ই-কমার্স সাইটটি।

রিল্যায়ান্স জানিয়েছে, তারা মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের টার্গেট করে এই ব্যবসার প্রসার ঘটাতে চায়। ইতোমধ্যে নিজেদের গ্রাহকদের জিওমার্ট ব্যবহারের আমন্ত্রণ জানিয়েছে তারা। আম্বানির বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের বড় দুটি নাম রিল্যায়্যান্স রিটেইল এবং রিল্যায়ান্স জিও। এই দুটির সমন্বয়ে জিওমার্ট শুরু করেছেন তিনি।

প্রাথমিকভাবে জিওমার্টের লক্ষ্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করা। এরইমধ্যে ৫০ হাজার পণ্য গ্রাহকদের সামনে হাজির করেছে তারা। ভারতের অনলাইন গ্রোসারি মার্কেট এখনও খুব একটা জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি। সেখানে বছরে লেনদেনের পরিমাণ ৮৭০ মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার হিসেবে ১ শতাংশেরও কম এই সেবা গ্রহণ করছে। বিশ্লেষকদের ধারণা, ২০২৩ সাল নাগাদ অনলাইন গ্রোসারি শপে বেচাকেনার পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় সাড়ে ১৪ বিলিয়ন ডলার। মূলত এই সুযোগকেই কাজে লাগাতে চায় রিল্যায়ান্স। 

দেশটির অনলাইন মার্কেট এখনও অ্যামাজন আর ফ্লিপকার্টের নিয়ন্ত্রণে। তাদের চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নতুন সুবিধা দিয়ে যাত্রা শুরু করেছে জিওমার্ট। ‘দেশের নতুন দোকান’ নামে প্রচারণা শুরু করেছে তারা, যা দেখা যাচ্ছে মুম্বাইয়ের আশপাশের তিন এলাকায়। জিওমার্ট গ্রোসারি পণ্যগুলো বিনামূল্যে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার সুবিধা ছাড়াও দিয়েছে ফেরত দেওয়ার সুযোগ।

প্রাথমিক এই প্রচারণাতেই আভাস মিলছে জিওমার্টের বড় কিছু হয়ে ওঠার। তারা গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগ করবে অ্যাপের মাধ্যমে। এই অ্যাপ ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়াতে তারা দিচ্ছে বিশেষ কিছু অফার। গত বছর  নতুন একটি আইনের কারণে বিদেশি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো কিছুটা হোঁচট খেয়েছে। আর সুযোগ বেড়েছে দেশি প্রতিষ্ঠানের। তবে রিল্যায়ান্সের এক মুখপাত্রকে নতুন এই ব্যবসা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি। 

এর আগে ২০১৬ সালে যাত্রা শুরু করে মোবাইল অপারেটর কোম্পানি রিল্যায়ান্স জিও ইনফোকম। বর্তমানে এটি দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান এবং তার ৩৫ কোটি গ্রাহক রয়েছে। বিনামূল্যে কথা বলা ও স্বল্পমূল্যে ডাটা সুবিধা দিয়ে প্রতিযোগীদের সঙ্গে নিজেদের ব্যবধান অনেক বাড়িয়ে ফেলেছে অপারেটর প্রতিষ্ঠানটি। আম্বানি এই সাফল্য নতুন ব্যবসাতেও ধরে রাখতে চান। চলতি বছর আগস্টে তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন এই বিজনেস টাইকুন। বলেছিলেন, ‘এই প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবসাটি উৎপাদনকারী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও গ্রাহকদের মধ্যে সংযোগ তৈরি করবে। আমরা অনেক বড় পরিসরে এটি পরিচালনার জন্য প্রস্তুত।’