‘এখনও রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে মিয়ানমার’

মিয়ানমারে এখনও রোহিঙ্গারা নাগরিকত্ব অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে ব্যাংককভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ফোর্টিফাই রাইটস। তারা জানায়, রোহিঙ্গাদের অন্তবর্তীকালীন শিবিরে নাগরিকত্ব কার্ড না দিয়ে জাতীয় ভেরিফিকেশন কার্ড দেওয়ার কথা বলা হয়েছে যেখানে তাদের পরিচয় ‘বাঙালি’ বলে  আখ্যা দেওয়া হয়েছে।

286315197f2f3cfb7f4505eea288cfca-5d6f8680cf45c

প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে রোহিঙ্গারা রাখাইনে থাকলেও মিয়ানমার তাদের নাগরিক বলে স্বীকার করে না। উগ্র বৌদ্ধবাদকে ব্যবহার করে সেখানকার সেনাবাহিনী ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে স্থাপন করেছে সাম্প্রদায়িক অবিশ্বাসের চিহ্ন। ছড়িয়েছে বিদ্বেষ। ৮২-তে প্রণীত নাগরিকত্ব আইনে পরিচয়হীনতার কাল শুরু হয় রোহিঙ্গাদের। এতে মিয়ানমারে বসবাসকারীদের Citizen, Associate এবং Naturalized পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। এমনকি দেশটির সরকার তাদের প্রাচীন নৃগোষ্ঠী হিসেবেও স্বীকৃতি দেয়নি। ১৮২৩ সালের পরে আগতদের Associate আর ১৯৮২ সালে নতুনভাবে দরখাস্তকারীদের Naturalized বলে আখ্যা দেওয়া হয়। ওই আইনের ৪ নম্বর প্রভিশনে আরও শর্ত দেওয়া হয়, কোনও জাতিগোষ্ঠী রাষ্ট্রের নাগরিক কি না, তা আইন-আদালত নয়; নির্ধারণ করবে সরকারের নীতি-নির্ধারণী সংস্থা ‘কাউন্সিল অব স্টেট’। এ আইনের কারণে রোহিঙ্গারা ভাসমান জনগোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত হয়।

ফর্টিফাই রাইটস জানায়, রোহিঙ্গাদের ভেরিকিশেন কার্ডে বাঙালি লিখে বোঝানো হয়েছে তারা বাংলাদেশ থেকে এসেছে এবং তাদের রোহিঙ্গা পরিচয়ের কোনও মূল্য নেই। রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নাগরিকত্ব অধিকার নিশ্চিত করতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানায় সংস্থাটি।

সংস্থাটি জানায়, তাদের কাছে নতুন তথ্য রয়েছে যে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ এখনও রোহিঙ্গাদের ন্যাশনাল ভেরেফিকেশন কার্ড নেওয়ার জন্য বাধ্য করছে। এতে করে নাগরিকত্ব অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে তারা। গত বছর মিয়ানমারের সমাজকল্যান, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয় থেকে এই কার্ড দেওয়া হয়।    

বিভিন্ন সময়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জাতিগত নিধনযজ্ঞের ভয়াবহতায় জীবন ও সম্ভ্রম বাঁচাতে লাখ লাখ রোহিঙ্গা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। শুধু বাংলাদেশেই আশ্রয় নিয়েছে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। তবে এখনও এ জনগোষ্ঠীর কিছু মানুষ রাখাইনে রয়ে গেছেন। এখন তাদেরও ‘বিদেশি’ হিসেবে উল্লেখ করা পরিচয়পত্র গ্রহণে বাধ্য করছে নিরাপত্তা বাহিনী।