কয়লার ব্যবহার বন্ধ করছে জার্মানি

অবশেষে জার্মান সরকার ও দেশটির কয়লা উৎপাদনকারী অঙ্গরাজ্যগুলো ২০৩৮ সালের মধ্যে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র সম্পূর্ণ বন্ধ করার বিষয়ে একটি চুক্তি করেছে৷ জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, কয়েকটি কেন্দ্র এ বছরই বন্ধ করে দেওয়া হবে৷ ক’দিন আগে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স চুক্তির নথি হাতে পেয়ে এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশ করেছিল। এবার জার্মানির তরফ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তির কথা জানা গেল।

noname
১৬ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) প্রকাশিত রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, জার্মানির চারটি রাজ্যের নেতা ও চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা ম্যার্কেল বিদ্যুৎকেন্দ্রে বাদামি কয়লার (ইগনাইট) ব্যবহার ধাপে ধাপে বন্ধের বিষয়ে একমত হয়েছেন। এই বিষয়ে তাদের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। চুক্তি অনুসারে সরকার রাজ্যগুলোকে ৪০ বিলিয়ন ইউরো প্রদান করবে। চুক্তিটি হাতে পাওয়ার দাবি করে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এখবর জানিয়েছে।
ডয়চে ভেলে তাদের রবিবারের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার আঙ্গেলা ম্যার্কেল সরকার ও কয়লা উৎপাদনকারী চার অঙ্গরাজ্য তাদের ওই পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন৷ অঙ্গরাজ্য চারটি হলো নর্থরাইন-ওয়েস্টফালিয়া, সাক্সনি, সাক্সনি-আনহল্ট এবং ব্রান্ডেনবুর্গ৷
পরিকল্পনাগুলো নিম্মরূপ:
# জার্মান সরকার নির্দিষ্ট সময়ের আগেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে চায়৷ যে কারণে তারা ২০৩৮ সালকে লক্ষ্যমাত্রা ধরলেও তিন বছর আগে অর্থাৎ ২০৩৫ সালের মধ্যে কয়লার ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ করতে চায়৷
# কয়লার ব্যবহার বন্ধ করার ক্ষতিপূরণ হিসেবে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীকোম্পানিগুলো ৪৩৫ কোটি ইউরো পাবে৷
# অন্তত আটটি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এ বছরই বন্ধ হচ্ছে৷
# কয়লার ব্যবহার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার এই প্রক্রিয়ায় সরকার ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলোকে এক হাজার চারশ’ কোটি ইউরো দেবে৷
# রাজ্যগুলোকে সহায়তার জন্য ভবিষ্যতে বাড়তি দুই হাজার ছয়শ’ কোটি ইউরো দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে৷
# এই চুক্তিটি যখন পার্লামেন্টের অনুমোদন নিয়ে আইনে পরিণত হবে কেবল তখনই আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া শুরু হবে৷
এ চুক্তির প্রশংসা করে জার্মানির পরিবেশমন্ত্রী স্ফেনিয়া শুলৎস বলেছেন, ‘‘আমরাই প্রথম দেশ যারা আইন করে শক্তির উৎস হিসেবে পরমাণু ও কয়লার ব্যবহার বন্ধ করছি৷ এর মাধ্যমে আমরা আন্তর্জাতিক বিশ্বকে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিচ্ছি৷'' আর অর্থমন্ত্রী ওলাফ শলৎস বলেন, ‘‘কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করার জন্য আমাদের যে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হচ্ছে তা বহনযোগ্য এবং আমার বিশ্বাস এর ফল ভালো হবে৷ জার্মানি জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার থেকে সরে আসতে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে৷''