আবারও বাগদাদের মার্কিন দূতাবাসের কাছে রকেট হামলা

ইরাকের রাজধানী বাগদাদের সরকারি ও বিদেশি দূতাবাস ভবন অধ্যুষিত গ্রিন জোনে আবারও রকেট হামলা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে আঘাত হানা তিনটি কাতিয়ুশা রকেটের দুটি বিস্ফোরিত হয় মার্কিন দূতাবাসের কাছে। হামলার পর পুরো গ্রিন জোন জুড়ে সতর্ক সংকেত বেজে ওঠে। তবে এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। ইরাকি পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বাগদাদের বাইরের জাফারানিয়া জেলা থেকে এসব রকেট ছোড়া হয়েছে।টাইগ্রিস নদী থেকে তোলা বাগদাদের গ্রিন জোনের সাধারণ চিত্র

গত ৩ জানুয়ারি মার্কিন ড্রোন হামলায় ইরানের শীর্ষ জেনারেল কাসেম সোলাইমানি নিহত হওয়ার পর বাগদাদে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের কাছে বেশ কয়েক দফায় রকেট হামলা হয়েছে। এসব হামলার জন্য ইরান সমর্থিত আধাসামরিক বাহিনীগুলোকে দায়ী করেছে ওয়াশিংটন। তবে কেউ এসব হামলার দায় স্বীকার করেনি।

এদিকে সোলাইমানি হত্যাকাণ্ডের পর ইরাকে নতুন করে শুরু হওয়া সরকারবিরোধী বিক্ষোভ সহিংস হয়ে উঠছে। সোমবার ওই বিক্ষোভে বিভিন্ন শহরে অন্তত পাঁচ জন নিহত হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা ইরান ও ওয়াশিংটনের প্রভাবমুক্ত সরকার গঠনের জন্য রাজনৈতিক সংস্কারের দাবি তুলেছে।

রাজনৈতিক সংস্কার কাজে গতি আনতে ইরাকের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত জাতিসংঘ দূত। একই সঙ্গে বিক্ষোভকারীদেরও শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এক বিবৃতিতে জাতিসংঘ দূত জেনিন হেন্নিস প্লাসচায়ের্ট বলেন, ‘মানুষের উদ্বেগ নিরসনে এখন পর্যন্ত যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা শেষ করা না হলে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের সহিংস দমন অসহনীয় আর যেকোনও মূল্যে তা এড়াতে হবে’।

প্রসঙ্গত, কর্মসংস্থানের সংকট, নিম্নমানের সরকারি পরিষেবা এবং দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে বাগদাদের রাজপথে নামে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী। নির্দিষ্ট কোনও রাজনৈতিক দলের অনুসারী না হয়েও রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে অনিয়ম ও ইরাকে বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলে আন্দোলনকারীরা। নিরাপত্তা বাহিনী টিয়ার গ্যাস ও গুলি চালিয়ে তাদের ওপর চড়াও হলে এই বিক্ষোভ আরও জোরালো হয়ে ওঠে, ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন শহরে। ডিসেম্বরের শুরুতে দেশটির আধাসরকারি মানবাধিকার কমিশন জানায় এসব বিক্ষোভে ৪৬০ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ১৭ হাজার। বেশিরভাগ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বিক্ষোভকারীদের ওপর সরকারি বাহিনীর মাত্রাতিরিক্ত বল প্রয়োগ ও গুলিবর্ষণের ফলে। কাসেম সোলাইমানির হত্যাকাণ্ড ঘিরে বিক্ষোভ কিছুটা স্তিমিত হয়ে এলেও নতুন করে তা আবারও দানা বেঁধে উঠেছে।