এবার পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় সিএএ বিরোধী প্রস্তাব

ভারতের তৃতীয় রাজ্য হিসেবে এবার পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় উঠতে যাচ্ছে দেশটির বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী প্রস্তাব। এর আগে কেরালা ও পাঞ্জাবেও একই ধরনের প্রস্তাব তোলা হয়েছিল। এর ধারাবাহিকতায় আগামী ২৭ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় একটি বিশেষ অধিবেশনে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে। রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস প্রস্তাবটি উত্থাপন করবে। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, এ ধরনের প্রস্তাব তিন থেকে চার দিনের মধ্যে পাস হওয়া উচিত। এরপরই বিধানসভায় বিলটি তোলার দিনক্ষণ নির্ধারণের কথা জানায় মমতার দল তৃণমূল কংগ্রেস। তবে তৃণমূলের এমন সিদ্ধান্ত দৃশ্যত চমকে দিয়েছে সিপিআই (এম) ও কংগ্রেসকে। কেননা, গত ৯ জানুয়ারি বিরোধীরা সিএএ বাতিলের প্রস্তাব পেশ করতে চাইলে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তা খারিজ করে দেন। সেদিন বিধানসভায় মমতা সাফ জানিয়ে দেন, ১৩ জানুয়ারি সোনিয়া গান্ধির ডাকা সিএএ বিরোধ সর্বদলীয় বৈঠকেও যাবেন না তিনি।

মমতার দাবি, তিনি হিংসার রাজনীতি সমর্থন করেন না, যা কংগ্রেস ও সিপিআই (এম) রাজ্যে করছে। প্রসঙ্গত, মমতা ভারত বনধের দিনে হওয়া সংঘর্ষের কথা বলেছিলেন।

তৃণমূল নেত্রীর এমন বক্তব্যের পর বাম দলগুলো ও কংগ্রেস দাবি করে, সিএএ-কে কেন্দ্র করে বিজেপি-বিরোধী যে বিরোধী ঐক্য গড়ে উঠছিল তা ধ্বংস করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘কেউ কেউ মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। কিন্তু আমরা গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে চাই। যারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করছেন তাদের বোঝা উচিত, এভাবে তারা কেবল বিজেপির হাতই শক্তিশালী করছেন।'

২৭ জানুয়ারি সিএএ বাতিলের প্রস্তাবে সমর্থন দিতে কংগ্রেস ও সিপিআই (এম)-এর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

সিএএ ও এনআরসি-র বিরুদ্ধে বিক্ষোভে যোগ দিতে বুধবারই দার্জিলিং যাচ্ছেন মমতা। তৃণমূল নেত্রীর এমন অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েছেন কংগ্রেস দলীয় এমপি অধীর চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘বেটার লেট দ্যান নেভার।’ সিপিআই (এম) বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘সরকারের এটা রেকর্ড রাখা উচিত যে আমরা গত ৯ জানুয়ারি সিএএ বাতিলের প্রস্তাব আনতে চেয়েছিলাম। এখন, কেরালা ও পঞ্জাবের পর হঠাৎ করে এটা করা হচ্ছে।'

ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে বাংলাদেশে, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে ২০১৫ সালের আগে আগত অমুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সমালোচকদের মতে, এই আইন বৈষম্যমূলক এবং সংবিধানে বর্ণিত দেশের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তির পরিপন্থী।