বাগদাদে যুক্তরাষ্ট্র-বিরোধী বিক্ষোভে লাখো ইরাকি

ইরাকের রাজধানী বাগদাদে মার্কিন সেনা উপস্থিতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন দেশটির লাখ লাখ মানুষ। শুক্রবার প্রভাবশালী ধর্মীয় নেতা মোকতাদা আল সাদরের আহ্বানে রাজধানীর দুটি এলাকায় জড়ো হন তারা। সম্প্রতি মার্কিন ড্রোন হামলায় ইরানি জেনারেল কাসেম সোলাইমানির সঙ্গে এক ইরাকি গোষ্ঠীর প্রধান নিহত হওয়ায় মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের দাবি উঠেছে।

iraq-20200124141116শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরের আগ থেকেই বাগদাদের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিক্ষোভে যোগ দিতে থাকেন ইরাকিরা। রাজধানীর বাইরের বিভিন্ন প্রদেশ থেকেও এই কর্মসূচিতে যোগ দিতে থাকেন শিয়া, সুন্নি, কুর্দি ও আরব নির্বিশেষে সব গোত্র-সম্প্রদায়ের ইরাকিরা। দুপুর নাগাদ বাগদাদে জড়ো হয় লাখ লাখ মানুষ।

বিক্ষোভে স্লোগান ওঠে—‘আমেরিকা নিপাত যাক, ইসরায়েল নিপাত যাক’, ‘ইরাক থেকে বের হয়ে যাও আমেরিকান সেনারা’।

ইরানপন্থী সাদর ইরাকে মার্কিন সেনার অব্যাহতি চেয়ে দাবি জানিয়ে আসছেন। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে শুক্রবার আল হুরিয়া চত্বর ও প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন অনেকে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মী বলেন, ‘আমরা চাই তারা সবাই চলে যাক- যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও আমাদের দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদরা।’
বিক্ষোভে সবার হাতে লাল, সাদা ও কালো কাপড় ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অনবরত স্লোগান দিচ্ছিলেন তারা। তবে এই মিছিল মার্কিন দূতাবাসের দিকে অগ্রসর হচ্ছে কিনা তা স্পষ্ট নয়। বাগদাদের মূলপথ ও গ্রিন জোনে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত রয়েছেন।

কর্মসংস্থানের সংকট, নিম্নমানের সরকারি পরিষেবা এবং দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে বাগদাদের রাজপথে নামে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী। ডিসেম্বরের শুরু পর্যন্ত এই বিক্ষোভে নিহত হয় সাড়ে চার শতাধিক মানুষ। বিক্ষোভের জেরে প্রায় দুই মাস আগে পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদুল মাহদি। তবে রাজনৈতিক দলগুলো এখন পর্যন্ত নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগে সম্মত হতে না পারায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। গত ৩ জানুয়ারি বাগদাদে ইরানের শীর্ষ জেনারেল কাসেম সোলাইমানি হত্যাকাণ্ডের পর বিক্ষোভ কিছুটা স্তিমিত হয়ে এলেও নতুন করে তা আবারও দানাবেঁধে উঠেছে।