ভারতে করোনা ভাইরাস আতঙ্ক, নজরদারিতে চীন ফেরত দুইজন

চীনে করোনা ভাইরাসে ২৬ জনের মৃত্যুর পর প্রতিবেশী দেশ ভারতেও এ নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ২৩ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সৌদি আরবের একটি হাসপাতালে কর্মরত এক ভারতীয় নার্স এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যেই চীন থেকে দেশে ফেরা দুই ব্যক্তিকে মুম্বাইয়ের একটি সরকারি হাসপাতালে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।12
প্রতিবেদনে বলা হয়, চীন থেকে দেশে ফেরা ওই দুইজনকে কস্তুরবা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে একটি বিশেষ ওয়ার্ডে তাদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। তাদের উভয়েরই সর্দি-কাশি হয়েছে; যা এ ভাইরাস আক্রান্তদের মধ্যেও দেখা যায়। ফলে তাদের আলাদাভাবে রেখে পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।

তাদের চিকিৎসক কেসকর জানিয়েছেন, ইতোমধ্যেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে তাদের দেহে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রয়েছে কিনা।

তিনি আরও বলেন, শহরের সব চিকিৎসকদের জানানো হয়েছে চীন থেকে ফেরা কোনও ব্যক্তির শরীরে যদি করোনা ভাইরাস সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দেয় তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে যেন সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবগত করা হয়।

কস্তুরবা হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মুম্বাইয়ের ছত্রপতি শিবাজি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থাকা চিকিৎসকদের বলা হয়েছে, চীন থেকে ফেরা কোনও ব্যক্তির মধ্যে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ দেখা দিলে তাকে ‘আইসুলেশন (বিচ্ছিন্নতা) ওয়ার্ডে' পাঠাতে হবে।

ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী বুধবার পর্যন্ত কলকাতা, মুম্বাই, দিল্লি, চেন্নাইসহ সাতটি বিমানবন্দরে ৪৩টি ফ্লাইট এবং ১২ হাজার যাত্রীকে পরীক্ষা করে দেখা হবে।

উহান থেকে আসা যাত্রীদের স্ক্রিনিং বা পরীক্ষা করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া প্রভৃতি দেশে।

উহান শহর থেকে উৎপত্তি হওয়া এ ভাইরাস ইতোমধ্যেই রাজধানী বেইজিংসহ চীনের ২৯টি প্রদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উহানসহ ১৩টি শহরকে ‘সিল’ করে দিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। শহরগুলোতে যানবাহন চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। চান্দ্র নববর্ষ পালন উৎসবের উদযাপনও বাতিল করা হয়েছে।

গত ২০ বছরে চীন এবং বাকি বিশ্বের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট যোগাযোগ দ্রুত সম্প্রসারিত হয়েছে। উহানের এক কোটি ১০ লাখ বাসিন্দা এখন সরাসরি ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন গন্তব্যের পাশাপাশি বাড়ির কাছের সিউল, ব্যাংকক, কুয়ালালামপুর ও সিঙ্গাপুরের মতো শহরে যেতে পারে। সে কারণেই ভাইরাসটি চীনের বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে। জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান ও সৌদি আরবসহ অন্তত ১২টি দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলেছে।