ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) ও জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) তীব্র সমালোচনা করেছেন বলিউডের প্রখ্যাত অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ। তিনি বলেছেন, এসব আইন ‘ভারতের অন্তরাত্মার জন্য হুমকি’। সম্প্রতি ইন্ডিয়ান কালচারাল ফোরামের এক নোটে এই মন্তব্য করেন তিনি। রবিবার (২৬ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ খরব জানিয়েছে দেশটির সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভি।
১৩ জানুয়ারি ইন্ডিয়ান কালচারাল ফোরামের প্রকাশিত ওই নোটে স্বাক্ষর করেছেন তিন শতাধিক বিশিষ্ট নাগরিক। তাদের মধ্যে অন্যতম অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ, পরিচালক মিরা নায়ার, লেখক অমিতাভ ঘোষ ও ঐতিহাসিক রোমিলা থাপার প্রমুখ। সেখানে তারা সিএএ ও এনআরসি বিরোধী চলমান ছাত্র আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে সরকারি ওইসব পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেন।
পরে তারা এক যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে, ‘ছাত্রসহ যারা এসব আইনের বিরুদ্ধে গিয়ে ভারতীয় সংবিধানের বহুত্ববাধ ও বৈচিত্র্যময় সমাজের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের আন্দোলনে শামিল হয়েছেন- আমরা তাদের সম্মান জানাই।’
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, “উন্মুক্ত আলোচনা বা জনগণের ভিন্নমতের সুযোগ না দিয়ে পার্লামেন্টের মাধ্যমে এসব আইন পাস করতে সরকারের নেওয়া কৌশল ও কার্যক্রম ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রীয় মূলনীতিবিরোধী। এসব আইনের কারণে জাতীয় মূল্যবোধ হুমকির মুখে। এর ফলে লাখ লাখ মানুষের জীবিকা ও নাগরিকত্ব বিপন্ন হবে। এনআরসির জন্য যারা তাদের কাগজপত্র দেখাতে পারবে না, তারা রাষ্ট্রহীন হবে। আর এসব ‘অবৈধ’ নাগরিকরা সিএএ’র মাধ্যমে নাগরিকত হতে পারে, যদি তারা মুসলিম না হয়।”
উল্লেখ্য, সম্প্রতি পাস হওয়া সিএএ-তে প্রতিবেশী বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে যাওয়া হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, জৈন, পার্সি ধর্মাবলম্বীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এই আইনে মুসলিমদের বাইরে রাখা হয়েছে। এর আগে আসামের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা (এনআরসি) থেকে বাদ পড়েছে প্রায় ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জন মানুষ। বাদ পড়াদের বেশিরভাগই মুসলমান। বিজেপির সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডকে অনেক সমালোচক মুসলিমবিরোধী এজেন্ডা বাস্তবায়ন হিসেবে দেখছেন। আর এসব আইনকে ‘মুসলিমবিরোধী’ ও ‘বৈষ্যমমূলক’ আখ্যা দিয়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলছে দেশজুড়ে। প্রতিবাদ জানিয়েছেন বলিউডের প্রখ্যাত অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, দীপিকা পাড়ুকোন, অভিনেতা কমল হাসান ও পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপসহ বিশিষ্টজনেরা।