বিশ্বে অস্ত্র উৎপাদনে রাশিয়াকে টপকে চীন এখন দ্বিতীয়

রাশিয়াকে পেছনে ফেলে চীন এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অস্ত্র উৎপাদনকারী দেশ। দেশটির অবস্থান এখন যুক্তরাষ্ট্রের ঠিক পরে। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সংঘাত ও সশস্ত্রীকরণসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইন্সটিটিউট (এসআইপিআরই) এর সবশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। এর আগে বেইজিংয়ের অস্ত্রের ব্যাপারে সঠিক তথ্য না থাকায় চীনকে তাদের অস্ত্রের আন্তর্জাতিক বাজার তালিকা থেকে বাদ দিয়েছিল ওই আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান।

12

ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের চারটি বড় অস্ত্র তৈরি কোম্পানির বিশ্বাসযোগ্য কিছু অর্থনৈতিক তথ্য পেয়েছে এসআইপিআরআই। এতে ২০১৫ হতে ২০১৭ সাল পর্যন্ত চীনের কোম্পানিগুলোর অস্ত্র উৎপাদনের অধিকাংশ তুলনামূলক চিত্রই তুলে ধরা হয়েছে। এসআইপিআরই ২০১৭ সালের সংশোধিত রিপোর্টে বলেছে, চীনের চারটি তালিকাভুক্ত কোম্পানি ৫,৪১০ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রি করেছে। ওই বছর রাশিয়া বিক্রি করে ৩,৭৭০ কোটি ডলারের অস্ত্র। এবছর বিশ্বের যে দশটি কোম্পানি সবচেয়ে বেশি অস্ত্র উৎপাদন করেছে তার ভেতরে চীনা কোম্পানি ছিল তিনটি। ওই বছর বিশ্বের বড় দশটি অস্ত্র কোম্পানি ২৮ হাজার ৪১০ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রি করেছিল। এরপর প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, ‘কোম্পানিগুলোর তথ্য সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে এখন সঠিকভাবে চীনের অস্ত্রশিল্পের নির্ভরযোগ্য মানদণ্ড নির্ধারণ করা সম্ভব।’

২০১৭ সালের বার্ষিক রিপোর্টকে স্টকহোমভিত্তিক সংস্থাটি সংশোধন করে এ তথ্য জানিয়েছে। তারা আগের রিপোর্টে চীনা অস্ত্র নির্মাণকারী কোম্পানিগুলোকে বাদ রেখেছিল। এ ব্যাপারে তাদের কাছে যথেষ্ট তথ্য ছিল না। ফলে রাশিয়াকে তারা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অস্ত্র উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে রেখেছিল। প্রতিষ্ঠানটি এখন বলছে, ২০১৭ সালে চীনের এই চারটি কোম্পানি যৌথভাবে আনুমানিক ৫৪.১ বিলিয়ন ডলার অস্ত্র বিক্রি করেছে, যা তাদের বিশ্বে শীর্ষ ২০টি অস্ত্র উৎপাদনের মধ্যে রাখবে। এর মধ্যে ‘তিনটি কোম্পানির অবস্থান শীর্ষ ১০ হবে।’ ২০১৭ যুক্তরাষ্ট্র সর্বমোট অস্ত্র বিক্রি করেছিলো ২২৬.৬ বিলিয়ন ডলার এবং রাশিয়া ৩৭.৭ বিলিয়ন ডলার। ওই বছরের থিঙ্ক-ট্যাঙ্কটির শীর্ষ ১০০ অস্ত্র উৎপাদনকারী কোম্পানির তালিকায় এমন চিত্র পাওয়া যায়।

প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায়, বিমান ও এভিওনিক্স গ্রুপ অ্যাভিয়েশন ইন্ড্রাস্ট্রি করপোরেশন অব চায়না (এভিআইসি) ষষ্ঠ বৃহত্তম অস্ত্র উৎপাদনকারী হবে, ২০১৭ সালে এ কোম্পানিটির আনুমাকি বিক্রি ২০.১ বিলিয়ন ডলার। এ সময় ভূমি ব্যবস্থা-কেন্দ্রিক চায়না নর্থ ইন্ড্রাস্ট্রিস গ্রুপ করপোরেশন (এনওআরআইএনসিও)’র অবস্থান হবে অষ্টম এবং এর অনুমানিক বিক্রয় ১৭.২ বিলিয়ন ডলার।

প্রতিষ্ঠানটির একজন মূখপাত্র জানান, অন্য দুই কোম্পানি- চায়না ইলেকট্রনিক্স টেকনোলজি গ্রুপ করপোরেশন (সিইটিসি) এবং চায়না সাউথ ইন্ড্রাস্ট্রিস গ্রুপ করপোরেশন (সিএসজিসি)’র আনুমানিক বিক্রি ছিল যথাক্রমে ১২.২ বিলিয়ন ডলার ও ৪.৬ বিলিয়ন ডলার। তবে এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি চীনা কর্তৃপক্ষ।

সু্ইডেনভিত্তিক এই থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক জানায়, ২০১৮ সালে অস্ত্রখাতে ব্যয় হয়েছে ১.৮ টিলিয়ন ডলার, এটা স্নায়ু যুদ্ধ অবসানের পর সর্বোচ্চ ব্যয়। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের কারণেই এই ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। ওই বছরেই যুক্তরাষ্ট্র ২৪৬ বিলিয়ন ডলার, রাশিয়া ৩৬.২ বিলিয়ন ডলার এবং যুক্তরাজ্য ৩৫.১ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রি করেছে বলেও প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়।

স্টকহোমভিত্তিক সংস্থাটি ২০১৭ সালের রিপোর্টে বলেছে, চীনের চারটি তালিকাভুক্ত কোম্পানি ৫,৪১০ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রি করেছে। ওই বছর রাশিয়া বিক্রি করে ৩,৭৭০ কোটি ডলারের অস্ত্র। এবছর বিশ্বের যে দশটি কোম্পানি সবচেয়ে বেশি অস্ত্র উৎপাদন করেছে তার ভিতরে চীনা কোম্পানি ছিল তিনটি। ওই বছর বিশ্বের বড় দশটি অস্ত্র কোম্পানি ২৮ হাজার ৪১০ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রি করেছিল।