বিক্ষোভকারীরা বাড়িতে ঢুকে ধর্ষণ করতে পারে: বিজেপি নেতা

দিল্লির বিধানসভার ক্ষমতায় বিজেপি আসলে এক ঘণ্টার মধ্যে শাহিনবাগের বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দলটির এক আইন প্রণেতা। বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে সেখানে বিক্ষোভ করছেন নারীরা। মঙ্গলবার ওই আইনপ্রণেতা দিল্লির বাসিন্দাদের উদ্দেশে বলেন, ‘কয়েক দিন পরে এই বিক্ষোভকারীরা আপনাদের বাড়িতে ঢুকে বোন আর মেয়েদের ধর্ষণ করবে, খুন করবে’। ভারতের সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, সিএএ বিরোধী আন্দোলনে ক্ষুব্ধ বিজেপি শাহিনবাগকেই নির্বাচনি প্রচারণার হাতিয়ার বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর ওই আইনপ্রণেতার মন্তব্যে সেই নীতিরই প্রতিফলন ঘটেছে।বিজেপির আইনপ্রণেতা পারবেশ সাহিব সিং ভারমা

গত ১২ ডিসেম্বর ভারত নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের পর থেকে দেশটির বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ শুরু হয়। ভারতের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভে সহিংসতা ৩০ জন নিহত হলেও দিল্লির শাহিনবাগ এলাকায় ২৪ ঘণ্টা ধরে অবস্থান নিয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন নারীরা। দীর্ঘদিন ধরে চলা ওই বিক্ষোভের মধ্যে আগামী মাসে অনুষ্ঠিত হবে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচন।

মঙ্গলবার ওই নির্বাচনি প্রচারণায় যোগ দিয়ে দিল্লির বিকাশপুরিতে বিজেপি আইনপ্রণেতা পারবেশ সাহিব সিং ভারমা বলেন, ‘এটা কেবল আরেকটা নির্বাচন নয়। এটা জাতীয় ঐক্যের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্বাচন। ১১ ফেব্রুয়ারি যদি বিজেপি ক্ষমতায় আসে, তাহলে এক ঘণ্টার মধ্যে আর কোনও বিক্ষোভকারীকে দেখা যাবে না। আর এক মাসের মধ্যে সরকারি জমিতে আমরা আর কোনও মসজিদ রাখবো না’। উল্লেখ্য, আগে গভর্নরকে লেখা চিঠিতে আইনপ্রণেতারা অভিযোগ তোলেন দিল্লিতে ‘ব্যাঙের ছাতার মতো’ মসজিদ ও কবরস্থান গড়ে উঠেছে। তবে সেখানকার সংখ্যালঘু কমিশনের তদন্তে ওই অভিযোগ মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়।

নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বিজেপির আইনপ্রণেতা পারবেশ সাহিব সিং ভারমা দাবি করেন দিল্লির ক্ষমতাসীন দল আম আদমি পার্টির (এএপি) নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল শাহিনবাগের বিক্ষোভকারীদের সমর্থন দিচ্ছে। বার্তা সংস্থা এএনআইকে তিনি বলেন, ‘দিল্লির মানুষকে বুঝতে হবে কয়েক বছর আগে এই আগুন কাশ্মিরে জ্বলেছিল। আর তাতে কাশ্মিরি পন্ডিতদের বোন-মেয়েরা ধর্ষণের শিকার হয়েছিল। পরে এই আগুন উত্তর প্রদেশ, হায়দ্রাবাদ, কেরালাতেও দেখা গেছে... আর এখন তা দিল্লির এক কোনাতেও লেগে গেছে’। তিনি বলেন, ‘লাখো মানুষ সেখানে জড়ো হয়েছে। তারা যেকোনও সময় আপনাদের বাড়িতে ঢুকে পড়তে পারে। আপনাদের বোন-মেয়েকে ধর্ষণ করতে পারে, খুন করতে পারে। সেকারণে দিল্লির মানুষকে আজকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে’।

এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলনের মুখে পড়ে শাহিনবাগের পরিস্থিতিকে কঠিন করে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। শাহিনবাগ তোপ দেগে এএপি ও কংগ্রেসকে কোনঠাসা করা যাবে বলে মনে করেন দলটির নেতারা। পারবেশ সাহিব সিং ভারমার মন্তব্যে ওই নীতির প্রতিফলন ঘটেছে।