উইঘুর ইস্যুতে চীনকে চাপ দিন: কাজাখস্তানকে যুক্তরাষ্ট্র

চীনে সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের ওপর অকথ্য নির্যাতনের বিষয়ে সীমান্তবর্তী দেশ চীনের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে কাজাখস্তানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। রবিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এ আহ্বান জানিয়েছেন। ২ ফেব্রুয়ারি কাজাখস্তানের রাজধানী নুর-সুলতানে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুকতার তেলেউবারদির সঙ্গে বৈঠকে এ নিয়ে কথা বলেন পম্পেও। তবে এ বিষয়ে মধ্য এশিয়ার দেশটির পক্ষ থেকে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।

Capture

কাজাখস্তান সফররত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেন, ‘আমরা মানব পাচার ও লাখ লাখ উইঘুর মুসলিমদের দুর্দশা নিয়ে আলোচনা করেছি।  সেই সময়ে চীনের জিনজিয়াংয়ে আটক সংখ্যালঘু কাজাখদের বিষয়েও আলাপ হয়েছে। তাদের ওপর নিপীড়ন বন্ধে যৌথভাবে তাৎক্ষণিক চাপ প্রয়োগ করতে যুক্তরাষ্ট্র সব দেশের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। চীন থেকে পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের সাধারণভাবে আশ্রয় ও শরণার্থী সুবিধা দেওয়ার অনুরোধ করছি।’

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা থাকা সত্ত্বেও মার্কিন ওই আহ্বানের জবাবে উইঘুর নির্যাতন ইস্যুতে কোনও মন্তব্য করেনি মধ্য এশিয়ার ওই মুসলিম অধ্যুষিত দেশটি।

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে তীব্র বাণিজ্য বিরোধ থাকলেও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দেশ কাজাখস্তানে তারাই শীর্ষ দুই বিনিয়োগকারী দেশ।

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর আশঙ্কা, চীনা বন্দিশিবিরগুলোতে ১০ লাখেরও বেশি উইঘুর মুসলিমকে বিনা বিচারে আটক করে রাখা হয়েছে। তবে সংবাদমাধ্যম উইঘুর টাইমস বলছে, এসব শিবিরে প্রকৃত বন্দির সংখ্যা ৩০ লাখ।

চীনে প্রায় দেড় কোটি উইঘুর মুসলমানের বাস। জিনজিয়াং প্রদেশের জনসংখ্যার ৪৫ শতাংশই উইঘুর মুসলিম। এই প্রদেশটি তিব্বতের মতো স্বশাসিত একটি অঞ্চল। বিদেশি মিডিয়ার সেখানে প্রবেশের ব্যাপারে কঠোর বিধিনিষেধ রয়েছে। কিন্তু গত বেশ কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন সূত্রে খবর আসছে, সেখানে বসবাসরত উইঘুরসহ ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের ওপর ব্যাপক ধরপাকড় চালাচ্ছে বেইজিং। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোও জাতিসংঘের কাছে এ ব্যাপারে উদ্বেগ জানিয়েছে। চীন বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

উইঘুর মুসলিমদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় নিপীড়নকে ‘সন্ত্রাস ও চরমপন্থা’র বিরুদ্ধে লড়াই হিসেবে আখ্যায়িত করে বেইজিং। ২০১৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি চীন সফরে গিয়ে দেশটির উইঘুর নীতির প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। সূত্র: রয়টার্স।