ইদলিবে বিদ্রোহীদের হামলায় ৫১ সিরীয় সেনা নিহত: তুরস্ক

সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইদলিব প্রদেশে আঙ্কারা সমর্থিত বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষে দেশটির সরকারি বাহিনীর ৫১ সদস্য নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে তুরস্ক। বিদ্রোহীদের সর্বশেষ ঘাঁটিতে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ বাহিনীর অভিযানে পাঁচ তুর্কি সেনা নিহত হওয়ার পর মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ওই অভিযান চালায় বিদ্রোহীরা। তবে এ বিষয়ে সিরীয় সরকারের পক্ষ থেকে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। 

12

গত সোমবার তুরস্ক সমর্থিত বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত এলাকা ইদলিব প্রদেশে সিরিয়ার সেনাবাহিনীর অভিযানে পাঁচ তুর্কি সেনা নিহত হয়। এই হামলার জবাবে সিরিয়ার শতাধিক স্থাপনায় পাল্টা হামলা চালায় তুরস্ক। দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান বলছেন, পাল্টা হামলা চলবে।

মঙ্গলবার সকালে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, ইদলিব অতিক্রম করে যাওয়ার সময় দামেস্কোর একটি মহাসড়কের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সরকারি বাহিনী। ২০১২ সালে গৃহযুদ্ধ শুরুর পর এই প্রথম এমন কোনও অগ্রগতির খবর এলো। সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, সিরীয় বাহিনী বিদ্রোহী ও জিহাদিদের এম৫ মহাসড়কের শেষ অংশ থেকে সরিয়ে দিয়েছে। অবশ্য বিষয়টি সিরীয় সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করা হয়নি।

তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বরাতে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ইদলিবে একে-অপরের অবস্থান লক্ষ্য করে ভারী মর্টার শেল নিক্ষেপ করছে সিরিয়া ও তুরস্ক সমর্থিত বিদ্রোহীরা। এখন পর্যন্ত তুরস্ক সমর্থিত বিদ্রোহীরা সিরিয়ার ২ টি ট্যাংক ও গোলাবারুদের ভাণ্ডারও ধ্বংস করেছে।  আর তুরস্ক দাবি করেছে, এরইমধ্যে সংঘর্ষে রুশ সমর্থিত সিরীয় সেনাদের ৫১ সদস্যের প্রাণহানি হয়েছে।

পরে বিদ্রোহীদের সূত্র জানিয়েছে, উত্তরাঞ্চলীয় কয়েকটি এলাকায় যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে। সিরিয়ার একটি সামরিক হেলিকপ্টার গুলি করে ভূপাতিত করে নাইরাব শহরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে তারা। তুরস্ক বলছে, সিরীয় সরকারি বাহিনী ওই এলাকা ছেড়ে চলে গেছে। তুরস্কের গোলন্দাজ বাহিনীর সমর্থনে বিদ্রোহীরা আরও শক্তিশালী হয়েছে। সারাকেবের কাছাকাছি সরকারি বাহিনীর কাছে হারানো এলাকা উদ্ধারে তারা পূর্ণোদ্যমে লড়াই শুরু করে দিয়েছে। সরকারি বাহিনীকে পিছু হটতে বাধ্য করার কথাও জানিয়েছেন বিদ্রোহী কমান্ডার।

২০১১ সালে শুরু হওয়া সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে ইদলিবে বাশারবিরোধী বিদ্রোহীরা শক্তিশালী ঘাঁটি গড়ে তুলেছে। ২০১৭ সাল থেকেই ইদলিবে বিদ্রোহীদের সহযোগিতার জন্য সেনা মোতায়েন রেখেছে তুরস্ক। ইরানি মিলিশিয়া ও রাশিয়ার বিমান হামলার সহযোগিতায় ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে শুরু করা অভিযানে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বাহিনী উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অনেক শহর ও গ্রাম পুনর্দখল করেছে। এ সময়ে ৫ লাখের বেশি মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে।