ইসরায়েলি দখলদারিত্ব সংশ্লিষ্ট কোম্পানির তালিকা প্রকাশ জাতিসংঘের

অবৈধ ইসরায়েলি দখলদারিত্বের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক রাখা ১১২টি কোম্পানির তালিকা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সংস্থাটি জানিয়েছে, এর মধ্যে ৯৪টি কোম্পানি ইসরায়েলভিত্তিক আর বাকি ১৮টি অন্য ছয় দেশের। কমিশন মনে করে আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ বিবেচিত ইসরায়েলি বসতির সঙ্গে এসব প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে বলে সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর যৌক্তিক কারণ রয়েছে। এই প্রতিবেদনকে স্বাগত জানিয়েছেন ফিলিস্তিনি নেতারা। তারা বলছেন, দখলকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাণিজ্য বর্জনের ক্ষেত্রে এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।দখলকৃত ফিলিস্তিনি এলাকায় ইসরায়েলি বসতি

দখলকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে ইসরায়েলি বসতি সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো শনাক্ত করতে ২০১৬ সালে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন। ৪৭টি সরকারের সমন্বয়ে গঠিত এই কমিশন জানিয়েছে, বিভিন্ন রাষ্ট্র, থিংক ট্যাঙ্ক, অ্যাকাডেমিক এবং কোম্পানির সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার ভিত্তিতে এক ‘জটিল প্রক্রিয়ায়’ নতুন প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, লুক্সেমবার্গ থাইল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যের কোম্পানি দখলকৃত ফিলিস্তিনি এলাকায় ব্যবসা করছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার মিশেল বাচেলেট বলেন, ‘নিবিড় ও অতি সতর্ক পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়ার’ মধ্য দিয়ে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

ফিলিস্তিনি নেতা মুস্তফা বারগুতি বলেছেন, ওই প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে যে এসব কোম্পানি ইচ্ছাকৃতভাবে আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করে ব্যবসা করছে। ১৯৪৯ সালে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের বেসামরিক জনগোষ্ঠীকে রক্ষায় গৃহীত হয় চতুর্থ জেনেভা কনভেনশনের আর্টিকেল ৪৯। এতে বলা হয়, দখলদার শক্তি নিজেদের জনগোষ্ঠীকে দখলকৃত এলাকায় পাঠাতে পারবে না। বারগুতি বলেন, ‘এই প্রতিবেদনের বিশাল প্রভাব রয়েছে কারণ এতে ফিলিস্তিনি জনগণ ও সারা বিশ্বের মানুষ এসব কোম্পানি বর্জন করতে থাকবে’। এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আহ্বান জানান ফিলিস্তিনি নেতা বারগুতি।

উল্লেখ্য, গত ২৮ জানুয়ারি ‘ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি’ বা শতাব্দীর সেরা চুক্তি নামের মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনা প্রকাশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এতে ফিলিস্তিনের ঐতিহাসিক জেরুজালেম শহরকে ইসরায়েলি ভূখণ্ড হিসেবে দেখানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় শহর জেরুজালেমের বাইরের আবু দিস নামের একটি ছোট গ্রামকে ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে। ওই পরিকল্পনায় জর্ডান নদীর পশ্চিম তীরের অংশবিশেষ ও গাজা উপত্যকা নিয়ে নামমাত্র একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের কথা বলা হয়েছে, যে রাষ্ট্রের নিজস্ব কোনও সেনাবাহিনী থাকবে না। তবে ফিলিস্তিনি জনগণ যেকোনও মূল্যে ওই একপেশে পরিকল্পনা রুখে দেবে বলে জানিয়েছেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।