২০১১ সালের জানুয়ারি মাসের এক শীতের সকালে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ার ওপর ফেলানির লাশ যেভাবে ঝুলছিল, সেই মর্মান্তিক দৃশ্য আজও ভোলেননি বাংলাদেশ ও ভারতের মানুষ। তবে ওই ঘটনায় বিএসএফের অমিয় ঘোষ নামে যে কনস্টেবল গুলি চালিয়েছিলেন বলে অভিযোগ, তিনি কিন্তু বাহিনীর নিজস্ব বিচার প্রক্রিয়ায় অব্যাহতি পেয়ে গেছেন।
সেই অব্যাহতিকে চ্যালেঞ্জ করেই ভারতের বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন সুপ্রিম কোর্টের শরাণাপন্ন হয়। তাদের দায়ের করা মামলাতেই অনেকদিন পর শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে এর শুনানি শুরু হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের কাগজপত্রে অবশ্য মামলাটি ‘মুহম্মদ নূর ইসলাম (ও আরও একজন ব্যক্তি) বনাম ভারত রাষ্ট্র (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়)’ নামেই নথিবদ্ধ হয়েছে।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফেলানি হত্যাকাণ্ডের জন্য বিএসএফকে নির্দোষ দাবি করেছেন। তার যুক্তি, শীতের সকালে ঘন কুয়াশার কারণে বিএসএফ সদস্যরা ফেলানিকে দেখতে পাননি, তারা চোরাকারবারি সন্দেহেই কাঁটাতারের বেড়া টপকানোর সময় গুলি চালিয়েছিলেন।
মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ১৮ মার্চ। ওই দিন বাদী পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তি ও সাক্ষ্যপ্রমাণ পেশ করার কথা রয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের মানবাধিকার সংস্থা-মাসুম ও তার কর্ণধার কিরীটি রায় এই মামলার অন্যতম পক্ষ। তিনি বলেন, ‘এতদিন বাদে যে ধুলো ঝেড়ে সুপ্রিম কোর্ট এই মামলার কাগজপত্র টেনে বের করলেন, সেটাকে আমরা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করছি।’
‘আমরা এখনও সুপ্রিম কোর্টের ওপর ভরসা হারাতে রাজি নই। যতই দেরি হোক, ভারতের শীর্ষ আদালতে ফেলানির পরিবার সুবিচার পাবেন—এই বিশ্বাস নিয়েই আমরা মামলা চালিয়ে যাবো’। বলেন কিরীটি রায়।