জার্মানিতে ‘বর্ণবাদী’ হামলায় নিহতরা বিদেশি বংশোদ্ভূত

জার্মানির হানাও শহরের দুইটি শিশাবারে হামলার পেছনে ‘উগ্র ডানপন্থি উদ্দেশ্য’ রয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা৷ স্থানীয় সময় বুধবার রাতের এই হামলায় নিহত ৯ জনের অধিকাংশই বিদেশি বংশোদ্ভূত৷ জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা ম্যার্কেল হামলার নিন্দা জানিয়েছেন৷ দেশটির সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।noname

বুধবার রাত দশটার দিকে হানাও শহরের একটি শিশাবার এবং পার্শ্ববর্তী ক্যাফেতে প্রবেশ করে গুলি চালায় ৪৩ বছর বয়সি বন্ধুকধারী৷ সেখানে বেশ কয়েকজন হতাহত হন৷ এরপর হামলাকারী সেই ঘটনাস্থল থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরে একটি গাড়ি এবং স্পোর্টস বারেও হামলা চালায়৷ সেখানেও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে৷ পরবর্তীতে হামলাকারী এবং তার মা-কে মৃত অবস্থায় একটি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ৷

বৃহস্পতিবার জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা ম্যার্কেল জানিয়েছেন, হানাও শহরের শিশাবারে  হামলার সঙ্গে সম্ভবত উগ্র ডানপন্থি চরমপন্থার সম্পর্ক রয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘অন্য জাতিসত্ত্বা, ধর্ম এবং চেহারার প্রতি বিদ্বেষ থেকে হামলাকারী উগ্র ডানপন্থি চরমপন্থার (বর্ণবাদী) উদ্দেশ্যে এই হামলা চালিয়েছে বলে এই মুহূর্তে নানা ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে৷’ তিনি আরও বলেন, ‘বর্ণবাদ এক ধরনের বিষ৷ ঘৃণা এক ধরনের বিষ৷ আর এই ঘৃণা আমাদের সমাজে এখনও আছে৷’

চ্যান্সেলর ম্যার্কেল আরও বলেন, ‘জার্মানি প্রতিটি মানুষের সম্মানজনক জীবনযাপনের অধিকার নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর, তা তিনি যে বর্ণের বা জাতিরই হোন না কেন৷’

গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, হামলাকারী অতীতে আরব এবং মুসলমান দেশগুলো সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করেছিল। বুধবারের হামলার দায় স্বীকার করা হয়েছে এমন একটি চিঠি এবং ভিডিও বার্তাও পরীক্ষা করছে পুলিশ৷   

জার্মানিতে নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত আলী কামাল আয়দিন দাবি করেছেন, নিহতদের মধ্যে অন্তত পাঁচজন তুর্কি নাগরিক ছিলেন৷ দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলছে, ‘এই হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, ইউরোপে বর্ণবাদ ও ইসলামবিদ্বেষ বাড়ছে।’

হানাওয়ে হামলার ঘটনার পর জার্মানির চারটি সবচেয়ে বড় ইসলামিক অ্যাসোসিয়েশন উগ্র ডানপন্থিদের চরমপন্থা রুখতে আরও কার্যকর পদক্ষেপ উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে৷ মুসলমানদের সমন্বিত কাউন্সিল কেআরএম জানিয়েছে, তারা গত কয়েক মাস ধরেই ইসলামবিদ্বেষের বিরুদ্ধে একটি পরিষ্কার অবস্থান নিতে কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানিয়েছে আসছিলেন৷  

উল্লেখ্য, জার্মানিতে গত কয়েক বছরে মসজিদসহ মুসলমানদের ওপর হামলার বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে৷ দেশটি ২০১৫ সালে দশ লাখের বেশি শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ার পর এ ধরনের হামলা বেড়ে যায়৷