ইউরোপের দক্ষিণাংশে সোমবার (৩০ জুন) ভয়াবহ তাপপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে। সেখানে অনেকস্থানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে। নিস্তার পায়নি যুক্তরাজ্যও। লন্ডনে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
ইতালি, স্পেন, গ্রিস এবং পর্তুগালের মতো দেশগুলো উচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড ভেঙেছে। স্পেনের একটি শহরে ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এই ব্যাপক তাপের কারণে উল্লেখযোগ্য স্বাস্থ্য সতর্কতা এবং মহাদেশজুড়ে দাবানলের ঝুঁকি বেড়েছে।
২০২৫ সালে ইউরোপজুড়ে তাপপ্রবাহ সম্পর্কিত মৃত্যুর সঠিক বর্তমান পরিসংখ্যান এখনও প্রকাশিত হয়নি। তবে প্রাথমিক অনুমান অনুযায়ী এ পর্যন্ত ৬৮৪ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে কেবল স্পেনেই ১১৪ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছেন।
এর আগে একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০২২ সালের অস্বাভাবিক উষ্ণ গ্রীষ্মকালে ৩৫টি ইউরোপীয় দেশে ৬১ হাজারের বেশি তাপ-সম্পর্কিত মৃত্যু হয়েছিল।
ইউকে হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সি ইংল্যান্ডের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের জন্য একটি অ্যাম্বার সতর্কতা জারি করেছে, যা আগামীকাল (১ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। এই সতর্কতায় বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। গত দুই সপ্তাহের মধ্যে এটি যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় তাপ সম্পর্কিত স্বাস্থ্য সতর্কতা।
আবহাওয়ার মানচিত্রগুলোতে ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের বেশিরভাগ অংশকে 'জ্বলন্ত লাল চুল্লি' হিসাবে দেখা যাচ্ছে। দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ড এবং লন্ডনে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা অনুভূত হলেও, হোম কাউন্টিগুলোতে তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে। মিডল্যান্ডসে ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং এমনকি ম্যানচেস্টার, লিডস এবং ইয়র্কের মতো উত্তরাঞ্চলীয় শহরগুলোতেও তাপমাত্রা প্রায় ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
এই তীব্র তাপ জনস্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গবেষকরা অনুমান করেছেন যে, ১৯শে জুন থেকে ২২শে জুনের মধ্যে কেবল ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসেই উচ্চ তাপের কারণে ছয় শতাধিক প্রাণহানি ঘটেছে।
যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপ জুড়ে কর্তৃপক্ষ এই মাত্রাতিরিক্ত তাপের কারণে সৃষ্ট স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমাতে বাসিন্দাদের পর্যাপ্ত পানি পান করতে, ছায়ায় থাকতে এবং দুর্বল প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নিতে পরামর্শ দিচ্ছে।