দিল্লির সহিংসতা: গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ৬ ঘণ্টা পড়ে রইলো কিশোর

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) শুরু হওয়া সংঘাতের মধ্য গুলিবিদ্ধ হয়েছে ১৪ বছরের এক কিশোর। গুলিবিদ্ধ কিশোরকে সঠিক সময়ে হাসপাতালে নিয়ে যেতে এলাকায় ঢুকতেই পারেনি অ্যাম্বুলেন্স। কার্যত বিনা চিকিৎসায় টানা ৬ ঘণ্টা পড়েই ছিল ওই স্কুলপড়ুয়া। শেষমেশ ৬ ঘণ্টা পর গুলিবিদ্ধ কিশোরকে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। হাসপাতালেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি রয়েছে সে।

Screen-Shot-2020-02-25-at-9.51.38-PM-1014x600

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) শুরু হওয়া সংঘাত মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) আরও সহিংস হয়। এ দুই দিনে উত্তর-পূর্ব দিল্লির বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতায় অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছে। ৭০ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন দেড়শতাধিক মানুষ। ভজনপুর, চান্দবাগ, কারায়াল নগরসহ বিভিন্ন এলাকায় লাঠি ও রড হাতে হামলা চালিয়েছে সশস্ত্র ব্যক্তিরা। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন দোকানপাট ও যানবাহন।

নাগরিকত্ব আইনের বিরোধী ও সমর্থকদের সংঘর্ষে অশান্ত দিল্লি। কদমপুরী এলাকায় সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে গুলিবিদ্ধ হয় ১৪ বছরের স্থানীয় ওই কিশোর। তার সঙ্গে আন্দোলনকারীদের কোনও যোগসূত্র ছিল না। শুধুমাত্র সংঘর্ষের মধ্যে কোনওভাবে এসে পড়ে ওই কিশোর। পরে হঠাৎই গুলি লাগে তার শরীরে। গুলি লাগার পরই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকলেও ভ্রূক্ষেপ ছিল না আন্দোলনকারী ও আন্দোলনের বিপক্ষে থাকা উন্মত্ত জনতার। তারই মাঝে চলে ভাঙচুর, আগুন।

এদিকে, দফায়-দফায় আন্দোলন-বিক্ষোভের জেরে একটা সময় কদমপুরী এলাকায় ঢোকার সব পথই বন্ধ হয়ে যায়। যার জেরে কিশোরকে উদ্ধারে এলাকায় যেতেই পারেনি অ্যাম্বুলেন্স। গুলি লাগার পর টানা ৬ ঘণ্টা পর্যন্ত কোনও চিকিৎসাই হয়নি ওই কিশোরের। শেষমেশ ৬ ঘণ্টা পর গুলিবিদ্ধ কিশোরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই কিশোর।

রবিবার থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষ সোমবারের পর মঙ্গলবারও দিনভর চলে। এদিন সন্ধ্যায় নতুন করে অশান্ত হয়ে ওঠে দিল্লির চাঁদবাগ এলাকা৷ একদিকে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসির প্রতিবাদে আন্দোলন ও অন্যদিকে আন্দোলনকারীদের দমন করতে মাঠে নামে অন্যপক্ষ। এতেই দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এলাকার একাধিক দোকানে চলে ভাঙচুর, আগুন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দিল্লির মৌজপুর, জাফরাবাদ, চাঁদবাগ, কারাওয়াল নগরে কারফিউ জারি করে স্থানীয় প্রশাসন।

চাঁদবাগে সিএএ ও এনআরসির প্রতিবাদে পথে নামেন সাধারণ মানুষ। আর আন্দোলন দমনের নামেও কয়েকশো লোক জড়ো হয় ওই এলাকায়। মুহূর্তে সংঘর্ষ বেঁধে যায় দু’পক্ষের মধ্যে। এরই মধ্যে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়েও বিক্ষোভ শুরু করে কয়েকজন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় পুলিশ৷

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আর কোনও উসকানিমূলক বক্তব্য না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। দিল্লির সঙ্গে উত্তর প্রদেশ ও হরিয়ানা রাজ্যের সীমান্ত পর্যবেক্ষণে রাখার কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।