যুক্তরাজ্যের ঘৃণাবাদবিরোধী বরাদ্দ বেশি পাচ্ছে মসজিদ

ঘৃণাবাদী হামলা থেকে সুরক্ষিত রাখতে এবছর ৪৯টি প্রার্থনাস্থলে তহবিল বরাদ্দ দিয়েছে যুক্তরাজ্যের সরকার। এই বরাদ্দ থেকে এ বছর সবচেয়ে বেশি অর্থ পেয়েছে মসজিদ। এই সপ্তাহে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০১৯-২০ বছরের জন্য ২৭টি মসজিদ, ১৩টি চার্চ, পাঁচটি গুরুদুয়ারা ও চারটি হিন্দু মন্দিরকে প্রায় ১৬ লাখ ইউরো বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।লন্ডনের একটি মসজিদ

ব্রিটিশ সরকারের ‘প্রার্থনাস্থল সুরক্ষায় নিরাপত্তা তহবিল বরাদ্দ কর্মসূচি’ ২০১৬ সালে শুরু হয়। এর আওতায় ঘৃণাবাদী হামলার জন্য স্পর্শকাতর বিবেচিত প্রার্থনাস্থলের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সিসিটিভি, বেড়া ও গেট নির্মাণ, অ্যালার্ম ও আলো স্থাপন নিশ্চিত করতে তহবিল যোগানো হচ্ছে। গত চার বছরের মধ্যে এই বছরই সবচেয়ে বেশি তহবিল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আগামী ২০২০-২১ বছরের জন্য বরাদ্দের পরিমাণ ৩২ লাখ ইউরোতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উগ্রবাদ প্রতিরোধ বিষয়ক জুনিয়র মন্ত্রী ব্যারোনেস সুসান উইলিয়ামস বলেন, ‘বিশ্বাস চর্চায় কারোরই ভয় পাওয়া চলে না। সেটা চার্চ, মসজিদ, গুরুদুয়ারা কিংবা মন্দিরই যেটাই হোক না কেন, প্রার্থনাস্থল হওয়া উচিত বিশ্বাস ও নিরাপত্তার প্রতিফলন’। তিনি বলেন, ‘প্রার্থনাস্থল কর্মসূচি সেই বাহ্যিক সুরক্ষা দিচ্ছে। সবসময়ই আমরা আরও বেশি কিছু করতে চাই কেননা এই ধরণের ভয়াবহ হামলা থেকে প্রার্থনাকারীদের রক্ষার বিষয়ে আমরা তাদের মতামত জানতে চাই।’

এদিকে নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে সন্ত্রাসী হামলার বর্ষপুর্তির দিনে গত রবিবার বিশেষ আলোচনা কর্মসূচি শুরু করেছে যুক্তরাজ্য। আট সপ্তাহের এই কর্মসূচিতে বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রুপের সঙ্গে আলোচনা চলবে। এতে নিজেদের সুরক্ষায় নির্দিষ্ট গ্রুপগুলোর মতামত জানার চেষ্টা করবে ব্রিটিশ সরকার। এছাড়া এতে ঘৃণাবাদী অপরাধের শিকার হওয়ার অভিজ্ঞতাও জানাতে পারবে সব ধর্মের বিশ্বাসীরা।

ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই আলোচনায় বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রুপের ভিন্ন ভিন্ন প্রয়োজনীয়তা এবং ধর্মীয় জমায়েতে নারী ও বয়স্ক সদস্যদের বেশি স্পর্শকাতর বিবেচনা করা স্বীকৃত হবে। আলোচনা শেষে মতামত বিশ্লেষণ করা হবে এবং ধর্মীয় গোষ্ঠীকে রক্ষায় ভবিষ্যতে কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার সময় এগুলো বিবেচনায় রাখবে সরকার।

যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সুরক্ষা তহবিল বরাদ্দের ক্ষেত্রে আবেদনকারীদের জন্য নতুন সিস্টেম চালু করা হয়েছে। এর আওতায় কোনও প্রার্থনাস্থলের বাহ্যিক নিরাপত্তার জন্য তালা, আলো ও সিসিটিভির মতো অন্য সরঞ্জামগুলো স্থাপন করবে একজন কেন্দ্রীয় ঠিকাদার। সব আবেদন বিবেচনা করে  যেগুলো ঘৃণাবাদী হামলার জন্য সবচেয়ে বেশি স্পর্শকাতর সেগুলোতেই বরাদ্দ দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে ইংল্যান্ড ও ওয়েলস পুলিশ প্রায় এক লাখ তিন হাজার ৩৭৯টি ঘৃণাবাদী অপরাধের তথ্য নথিবদ্ধ করেছে। আগের বছরের তুলনায় এই পরিমাণ দশ শতাংশ বেশি। তবে ব্রিটিশ সরকারের দাবি, আগের চেয়ে অনেক বেশি মানুষ এখন এসব অপরাধের তথ্য প্রকাশ করতে সক্ষম হওয়ায় পরিমাণ বাড়তে দেখা যাচ্ছে।