করোনা মোকাবিলায় আজানের বাণী বদলে দিলো আমিরাত

বিশ্বজুড়ে মহামারি আকার ধারণ করা করোনা ভাইরাসে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কর্তৃপক্ষ আজানের বাণী বদলে দিয়েছে। সোমবার আমিরাতের মসজিদগুলোতে যে আজান দেওয়া হয় তাতে একটি নতুন বাক্য যুক্ত হয়েছে। আজানে যুক্ত করা এই নতুন বার্তায় লোকজনকে বাড়িতে থেকে নামাজ পড়ার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে। খালিজ টাইমস ও গালফ নিউজের বরাতে এ খবর জানিয়েছে বিবিসি বাংলা।

1_16a0846e957.2149735_273523210_16a0846e957_small

মসজিদে নামাজ পড়ার আহ্বান জানিয়ে যে আজান দেওয়া হয় সেটির বাণীতে একটি বাক্য হচ্ছে 'হাইয়া লাল-সালাহ', অর্থ হলো—নামাজ পড়তে আসুন।

আমিরাতের নতুন আজানে যে বাণী যুক্ত করা হয়েছে তাতে মুয়াজ্জিন বলছেন, ‘আল-সালাতু ফি বুয়ুতিকুম’। অর্থাৎ বাড়িতে থেকে (অথবা আপনি যেখানে আছেন সেখানে থেকেই) নামাজ পড়ুন। মুয়াজ্জিনকে এ বাক্যটি দু'বার বলতেও শোনা যায়।

দুবাইয়ের ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড চ্যারিটেবল অ্যাক্টিভিটিজ ডিপার্টমেন্টকে উদ্ধৃত করে গালফ নিউজের খবরে বলা হয়েছে, ওই বিভাগের ইনস্টাগ্রাম পেজে পোস্ট করা এক বার্তায় বলা হয়, ‘প্রতিষ্ঠানটির জাতীয় ও সামাজিক দায়িত্বে প্রতি অঙ্গীকার অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুবাইয়ের সব মসজিদে জামাতে নামাজ পড়া স্থগিত থাকবে এবং জনগণকে তাদের বাড়িতে থেকে নামাজ পড়তে বলা হবে এবং এই মহামারি মোকাবিলায় আমাদের সাহায্য করার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা হবে’।

গালফ নিউজের খবরে আরও বলা হয়েছে, এই পোস্টের আরবি সংস্করণে শেষে একটি লাইন জুড়ে দেওয়া হয়েছে, যাতে বলা হয়, এখন মুয়াজ্জিনকে বলতে শোনা যাবে ‘বাড়িতে নামাজ পড়ুন’।

খালিজ টাইমসের রিপোর্টে বলা হয়, দ্য জেনারেল অথরিটি অব ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড এনডাওমেন্টস সোমবার বলেছে, ‘মসজিদগুলো থেকে মুসল্লিদের নামাজের সময়ের ব্যাপারে সচেতন করতেই শুধু আজান দেওয়া হবে। মসজিদের দরজা বন্ধ থাকবে।’

এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই এই নতুন আজানের ভিডিও পোস্ট করে বিস্ময় প্রকাশ করছেন।

করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯’র বিস্তার ঠেকানোর জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতে মসজিদে এসে নামাজ পড়া স্থগিত রাখা হয়েছে। এই স্থগিতাদেশের মেয়াদ চার সপ্তাহ। সোমবার রাতে আমিরাত সরকারের এ নির্দেশ ঘোষিত হয়। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সব জায়গাতেই এক মাসের এ স্থগিতাদেশ কার্যকর থাকবে। মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশটিতে ১১৩ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতির বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

মঙ্গলবার পর্যন্ত বিশ্বে ১ লাখ ৭৩ হাজার লোক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে মারা গেছেন সাত হাজার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একে বিশ্বব্যাপী মহামারি বলে ঘোষণা করেছে।