'করোনাভাইরাসের অর্থনৈতিক ক্ষতি সামলাতে বহু বছর লেগে যেতে পারে’

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের অর্থনৈতিক ক্ষতি সামলাতে ‘বহু বছর লেগে যেতে পারে।’ এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা ওইসিডি। সংস্থাটির মহাপরিচালক এঞ্জেল গুরিয়া বলেছেন, এই মহামারি থেকে যে অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে তার থেকে বেশি বড় হয়ে উঠেছে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে এর আকস্মিকতা।ওইসিডি প্রধান এঞ্জেল গুরিয়া

ওইসিডি সরকারগুলোর কাছে আহ্বান জানিয়েছে, তারা যেন তাদের ব্যয় নীতি ভুলে গিয়ে দ্রুত ভাইরাস পরীক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিত করে। ভাইরাসের চিকিৎসার পেছনে যেন মনোযোগী হয়।

সাম্প্রতিক এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, করোনাভাইরাস গুরুতর আকারে ছড়িয়ে পড়লে বিশ্বব্যাপী প্রবৃদ্ধির হার অর্ধেক কমে তা ১ দশমিক ৫ শতাংশে দাঁড়াবে। এঞ্জেল গুরিয়ার আশঙ্কা, পরিস্থিতি এর চেয়েও খারাপের দিকে যেতে পারে। ফলে ওই পূর্বাভাসকেই এখন তিনি আশাবাদী পূর্বাভাস বলে মনে করছেন।

এঞ্জেল গুরিয়া বলেন, কত মানুষ চাকরি হারিয়েছেন এবং কোম্পানিগুলোর কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। কিন্তু এটা স্পষ্ট যে, বিভিন্ন দেশের জন্য এই ক্ষতি সামাল দিতে অনেক বছর লেগে যাবে।

তিনি বলেন, আগামী কয়েক মাসে বিশ্বের বড় বড় অর্থনীতির দেশগুলোতে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেবে। আর্থিক ক্যালেন্ডারের পর পর দুটি কোয়ার্টার ধরে এই মন্দা চলতে থাকবে।

এঞ্জেল গুরিয়া বলেন, বিশ্বব্যাপী মন্দা যদি নাও হয়, তারপরও বিশ্বের অনেক দেশে একেবারেই কোনও প্রবৃদ্ধি হবে না। কোনও কোনও দেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার হবে নিম্নমুখী।

তার ভাষায়, ‘এসব দেশের মধ্যে বড় বড় অর্থনীতির দেশও থাকবে। ফলে সার্বিকভাবে এ বছর প্রবৃদ্ধি হবে নিম্নমুখী এবং প্রবৃদ্ধির হার আবার উর্ধ্বমুখী হতে অনেক দিন সময় লাগবে।’ওইসিডি বলছে বিশ্বব্যাপী এই ভাইরাসের সংক্রমণ অর্থনীতির ওপর একটা আকস্মিক আঘাত

এঞ্জেল গুরিয়া বলেছেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে যে বিশাল অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তা ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক সংকটের পর অর্থবাজারে যে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল তার চেয়েও অনেক বেশি আকস্মিক।

তিনি বলেন, ‘এর কারণ হল এই প্রাদুর্ভাবের ফলে যে বেকারত্ব তৈরি হবে, তা সামাল দেওয়া কতটা কঠিন হবে তা আমরা জানি না। আসলে কত লোক যে বেকার হবেন, সেটাই এখনও স্পষ্ট নয়। আমাদের কাছে এটাও জানা নেই যে, ছোট ও মাঝারি কত লাখ লাখ প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা ইতোমধ্যেই ক্ষতির মুখে পড়েছে।’

বিভিন্ন দেশের সরকার অবশ্য এরইমধ্যে কর্মী ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সাহায্য করার জন্য নজিরবিহীন নানা পদক্ষেপ নিয়েছে।

যুক্তরাজ্যের নীতি নির্ধারকরা ঘোষণা করেছেন, করোনা মহামারির কারণে যারা কাজে যেতে পারছে না তাদের বেতনের একটা বড় অংক সরকারি কোষাগার থেকে দেওয়া হবে। সূত্র: বিবিসি।