সিঙ্গাপুরে ২০ হাজার অভিবাসী শ্রমিক কোয়ারেন্টিনে

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় দুই ডরমিটরিতে বসবাসকারী ২০ হাজার অভিবাসী শ্রমিককে কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দিয়েছে সিঙ্গাপুর। তাদেরকে ১৪ দিনের জন্য নিজ নিজ ডরমিটরিতে অবস্থান করতে বলা হয়েছে। অভিবাসী শ্রমিকদের দুইটি ডরমিটরিতে আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার পর এ নির্দেশ দেওয়া হয়। কোয়ারেন্টিনে রাখা কর্মীদেরকে বেতন ও তিন বেলা খাবার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে শ্রমিকদের কারও কারও অভিযোগ, ডরমিটরিতে গাদাগাদি অবস্থায় থাকতে হয় এবং তা অপরিচ্ছন্ন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
 
অভিবাসী শ্রমিক (ফাইল ফটো)২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত করা এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী,সিঙ্গাপুরে প্রায় ৫৭ লাখ মানুষের বসবাস। এর মধ্যে ১৪ লাখই বিদেশি শ্রমিক। তাদের মধ্যে আবার ২ লাখ ৮৪ হাজারই নির্মাণ কাজে যুক্ত। নিয়োগকারীরা চাহিদা অনুযায়ী বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ডসহ ১২টি দেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগ দিতে পারেন।
 
করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় শুরু থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে সিঙ্গাপুর প্রশংসিত হলেও স্থানীয়ভাবে সংক্রমণের হার বাড়ছে। এ পর্যন্ত সেখানে আক্রান্ত হয়েছে ১৩০০ এর বেশি মানুষ। মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) থেকে এক মাসের জন্য সার্কিট ব্রেকার নীতিতে (অন্য দেশের লকডাউনের মতো) যাচ্ছে দেশটি। সংক্রমণ ঠেকাতে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে পুঙ্গলের এস১১ ডরমিটরি ও ওয়েস্টলাইট তোহ গুয়ান ডরমিটরিকে। এগুলো দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে সিঙ্গাপুরে যাওয়া নির্মাণ শ্রমিকদের বসবাসস্থল হিসেবে পরিচিত।
 
দুই ডরমিটরির একটিতে ১৩ হাজার শ্রমিকের বসবাস। সেখানে করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ৬৩ জন। আরেকটি ডরমিটরিতে বসবাস করে ৬ হাজার ৮০০ কর্মী। সেখানে করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ২৮ জন।
শ্রমিকদেরকে তাদের আবাসন ব্লক থেকে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। তাদেরকে বলা হয়েছে, যেসব মানুষ তাদের রুমে অথবা ফ্লোরে থাকেন না, তাদের সঙ্গে না মিশতে।বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক রুমে কতজন অবস্থান করবেন তা নির্ভর করে ডরমিটরি ভেদে। ২০১৫ সালে একটি নতুন কমপ্লেক্স পরিদর্শন করে বিবিসি। তাতে দেখা যায় গড়ে প্রতি রুমে অবস্থান করেন ১২ জন শ্রমিক।
 
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কোয়ারেন্টিনে থাকা শ্রমিকরা তাদের বেতন পাবেন। তাদেরকে তিনবেলা খাবার দেওয়া হবে। পাবেন মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও থার্মোমিটার। থার্মোমিটার ব্যবহার করে প্রতিদিন দু’বার তাপমাত্রা রেকর্ড করতে হবে। কিন্তু পাঙ্গল ডরমিটরির ৬ জন শ্রমিক স্ট্রেইটস টাইমস-এর কাছে অভিযোগ করেছেন, তাদের যেখানে রাখা হয়েছে, তা তেলাপোকায় পূর্ণ। টয়লেটগুলো উপচে পড়ছে। খাবারের জন্য লম্বা লাইন দিতে হয়।
সিঙ্গাপুরে বিদেশী শ্রমিকদের ডরমিটরিগুলো বেসরকারিভাবে পরিচালিত হয়। যদি তাদের অধীনে কমপক্ষে ১০০০ শ্রমিক থাকে তবে পরিচালনাকারীদের অবশ্যই লাইসেন্স থাকতে হয়।