পলাতক তাবলিগ সদস্যদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করবে আসাম

গত মাসে ভারতের রাজধানী দিল্লির নিজামুদ্দিনের সমাবেশে যোগ দেওয়া তাবলিগ সদস্যরা মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য এগিয়ে না আসলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ঘোষণা দিয়েছে আসাম। সোমবার (৬ এপ্রিল) রাজ্য সরকারের চূড়ান্ত ঘোষণায় মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে ওই সমাবেশে যোগ দেওয়া তাবলিগ সদস্যদের নিকটস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে হাজির হতে বলা হয়েছে। না হলে তাদের বিরুদ্ধে মানুষ হত্যার মতো অপরাধের অভিযোগে মামলা দায়ের হবে বলে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভি এই খবর জানিয়েছে।noname

মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের তাবলিগ জামাতের একটি আয়োজন গত ১ মার্চ দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজ মসজিদে শুরু হয়। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব ও কিরগিজস্তানের প্রতিনিধিসহ প্রায় দুই হাজার মানুষ ওই আয়োজনে অংশ নেয়। এই আয়োজনে অংশ নেওয়া অনেকের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেওয়ায় ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে প্রায় ২৫ হাজার মানুষকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে।

দিল্লিতে তাবলিগ জামাতের সদরদফতরের সমাবেশে যোগ দেওয়া অনেকেই স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ এড়িয়ে চলছে। ওই সমাবেশে অংশগ্রহণকারী ও তাদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের খোঁজে বড় ধরনের তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে আসামের রাজ্য সরকার। গত রবিবার আসামের দারাং জেলা থেকে আটক করা হয় মহারাষ্ট্র থেকে আসা তাবলিগ জামাতের ৯ সদস্যকে। তারা দিল্লির সমাবেশে যোগ দিয়ে আসামে আসলেও পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।

আসামের পুলিশ প্রধান ভাস্কর জ্যোতি মহান্ত বলেন, ‘ইতোমধ্যেই একটি অভিযান শুরু হয়েছে। প্রথমে আমরা তাবলিগের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ৮০ জন খুঁজছি। আমাদের তদেন্ত পাওয়া নামগুলো তালিকায় যোগ করা হয়েছে আর ৩৮০ জনেরও বেশি লোকের অবস্থান শনাক্ত করতে হবে। লুকিয়ে থাকা প্রায় ৩০ জনকে আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। একটি বিশেষ সেল এনিয়ে কাজ করছে। মুসলমান সম্প্রদায়ের কাছ থেকেও আমরা সহায়তা নিচ্ছি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সময় সীমা শেষ হওয়ার পরও যারা ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবে না তাদের বিরুদ্ধে নরহত্যার মতো অভিযোগে আনা হবে।’

আসামে শনাক্ত হওয়া ২৬ জন করোনা আক্রান্তের মধ্যে ২৫ জনই মারকাজ নিজামুদ্দিনের সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন বা তাদের সংস্পর্শে এসেছিলেন। মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক খতিয়ে দেখে এখন পর্যন্ত আটশো মানুষের খোঁজ পেয়েছে আসাম সরকার। যারা গত মাসের ওই সমাবেশের সময় নিজামুদ্দিন মারকাজের আশেপাশে ছিলেন। এদের মধ্যে তিনশোরও বেশি তাবলিগ জামাতের সদস্য বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুলিশ সূত্রের বরাতে এনডিটিভি জানিয়েছে, এদের মধ্যে ৩০ জন পুরোপুরি পলাতক।

সোমবার আসামের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা অবশ্য খানিকটা আশাবাদ শুনিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আসামের তাবলিগ জামাত কমিটির সঙ্গে বেশ কয়েকবার বৈঠক করেছি আর আশা করছি শনাক্ত না হওয়া অনেকেই সন্ধ্যার মধ্যে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবে’।