নিস্তব্ধতা ভাঙছে ইতালির, ফিরছে স্বস্তি

প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার কমে ইতালিতে বাড়তে শুরু করেছে সুস্থ হওয়া মানুষের সংখ্যা। গত কয়েকদিনে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা কমে যাওয়ায় দেশটিতে আরোপ করা কঠোর লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। দীর্ঘ দুই মাসের বন্দিদশা থেকে সোমবার বাইরে বের হওয়ার সুযোগ পেয়েছে দেশটির প্রায় ৬ কোটি মানুষ। স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে সেখানকার মানুষের জীবনে।noname

ইতালির সিভিল প্রোটেকশন এজেন্সির তথ্য অনুযায়ী, গত ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর এখন পর্যন্ত ইতালিতে মৃতের সংখ্যা ২৯ হাজার ছাড়িয়েছে। আর আক্রান্ত দুই লাখ ১১ হাজার ৯৩৮ জন। সোমবার মৃতের তালিকায় যুক্ত হয়েছেন ১৯৫ জন ও সংক্রমিত হয়েছেন ১ হাজার ২২১ জন। দেশটিতে গত একদিনে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১২২৫ জন করোনা রোগী। এনিয়ে সুস্থ মানুষের মোট সংখ্যা ৮২ হাজার ৮৭৯ জন।

লকডাউন শিথিলের পর সোমবার শহরবাসীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে ইতালির ব্যস্ততম রাস্তা, পার্ক, সমুদ্র সৈকতসহ খোলামেলা সকল স্থান।   গত ১১’ই মার্চ দেশটিতে লকডাউন ঘোষণা দেওয়ার পর এদিন প্রথমবারের মত ইতালির রাস্তাগুলি ফিরে পেতে শুরু করেছে তার চিরচেনা রূপ।

লকডাউন শিথিলের প্রথম দিনে কাজে ফিরেছে দেশটির প্রায় ৪০ লাখ মানুষ। খুলেছে অফিস আদালত, উৎপাদন শিল্প, নির্মাণ খাত ও পাইকারি দোকান। রেস্টুরেন্ট, স্টেশনারি, বইয়ের দোকান, বাচ্চাদের কাপড়ের দোকান, কম্পিউটার ও কাগজপত্র তৈরির কাজ শুরুর অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

আগামী ১৮ মে থেকে বাণিজ্যিক কিছু অংশ, প্রদর্শনী, জাদুঘর, প্রশিক্ষণ টিম, ক্রীড়া ক্ষেত্র এবং গ্রন্থাগার খোলার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

লকডাউন শিথিল করা হলেও কোভিড-১৯  এর প্রকোপ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত সবাইকে পাবলিক পরিবহণসহ ঘরের বাইরে মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখার কথাও বলা হয়েছে। করোনাভাইরাসকে পুরোপুরি পরাজিত করতে সবাইকে বিধিনিষেধ মেনে চলতে অনুরোধ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

ইতালির ভেসেন্সা শহরে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশী সিদ্দিক হাওলার বলেন, ‘দীর্ঘ দুই মাস পর ঘর থেকে বের হওয়ার সুযোগ পেলাম। এতোদিন কাজ বন্ধ ছিলো। আজ থেকে কাজে যোগ দিলাম। লকডাউন শিথিলে প্রাণ ফিরে পেয়েছে ইতালি। আশা করছি এখানে খুব তাড়াতাড়ি অবস্থা স্বাভাবিক হবে।’

ইতালির নাপোলিতে বসবাস করেন ব্যবসায়ী ইকবাল ভূইয়া। তিনি জানান, ‘লকডাউনের কারণে দোকান পাঠ সীমিত পরিসরে খুলতে হতো। ব্যবসায়ীদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। তবে এখন লকডাউন শিথিল হওয়ায় দোকান পাট খুলছে। ফের আমাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তাছাড়া দুই মাস পর বন্ধিদশা থেকে বাহিরে আসছে এখানকার মানুষ। স্বস্তি ফিরেছে ইতালিতে।’