পুলিৎজার জিতলেন তিন কাশ্মিরি সাংবাদিক

২০১৯ সালের আগস্টে ভারত শাসিত কাশ্মিরে অভূতপূর্ব পরিস্থিতির ওপর কাভারেজ করে সাংবাদিকতার সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার পুলিৎজার জিতেছেন মার্কিন বার্তা সংস্থা এপির তিন সাংবাদিক। টানা কারফিউ, ইন্টারনেট আর মোবাইল বন্ধের মতো শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি বিশ্বের সামনে তুলে ধরে এই সম্মান পেয়েছেন ফটো সাংবাদিক দার ইয়াসিন, মুখতার খান এবং চেন্নাই আনন্দ। ফিচার ফটোগ্রাফি শাখায় পুরস্কার জিতেছেন তারা। সোমবার ইউটিউবে সরাসরি সম্প্রচারে এই পুরস্কার ঘোষণা করা হয়।noname

সাধারণত প্রতিবছর নিউ ইয়র্কের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পুলিৎজার ঘোষণা করা হয়। তবে এবার করোনাভাইরাস মহামারির কারণে ওই আয়োজন বাতিল করে পুলিৎজার বোর্ড প্রশাসক ডানা কেনেডি’র লিভিং রুম থেকে ঘোষণা করা হয় এই পুরস্কার।

পরে ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিবৃতিতে পুলিৎজার কর্তৃপক্ষ বলেছে, অস্থির কাশ্মিরি জীবনের আকর্ষণীয় ছবি তোলার কারণে এপি’র তিন সাংবাদিক পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন। কখনো পথচারীদের আড়ালে লুকিয়ে, কখনো রোডব্লক এড়িয়ে, আবার কখনো সবজির ব্যাগে ক্যামেরা নিয়ে এই তিন সাংবাদিক বিক্ষোভ, পুলিশ আর আধাসামরিক বাহিনীর অভিযান আর প্রাত্যহিক জীবনের ছবি তুলেছেন। ছবি তোলা শেষে তারা স্থানীয় বিমানবন্দরে গিয়ে যাত্রীদের হাতে ফাইল দিয়ে দিল্লিতে এপি’র কার্যালয়ে ছবি পৌঁছে দিয়েছেন।noname

সোমবার পুরস্কার ঘোষণার পর এক ইমেইল বার্তায় দার ইয়াসিন বলেন, ‘সব সময়ই এটা ছিলো ইদুর-বিড়ালের খেলা। আর এতে করে আমরা আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতাম যে কখনোই স্তব্ধ করা যাবে না।’ দার ইয়াসিন ও মুখতার খান কাশ্মিরের মূল শহর শ্রীনগরের বাসিন্দা হলেও চেন্নাই আনন্দ জম্মু জেলার বাসিন্দা। আনন্দ বলেন, এই পুরস্কার পেয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি বিস্মিত আর বিশ্বাসই করতে পারছি না।’

এপি’র প্রেসিডেন্ট ও সিইও গ্যারি প্রুইট বলেছেন, ওই তিন সাংবাদিকের কাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং চমৎকার। তিনি বলেন, ‘কাশ্মিরের অভ্যন্তরের দলকে ধন্যবাদ।’ তাদের কাজের জন্যই মানুষ কাশ্মিরের নাটকীয়তা দেখার সুযোগ পেয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

উল্লেখ্য, হিমালয়ের পার্বত্য এলাকা কাশ্মিরের আলাদা আলাদা অংশ শাসন করে থাকে ভারত ও পাকিস্তান। গত বছর ভারতের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্য কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী সরকার। এই পদক্ষেপ ঘিরে ওই অঞ্চলে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি কারফিউ জারিসহ নাগরিক অধিকার সীমিত করা হয়।

সূত্র: আল জাজিরা