করোনা সংক্রমণের প্রাথমিক ঘটনাগুলো খতিয়ে দেখার আহ্বান

ধারণার চেয়েও আগে ইউরোপে করোনাভাইরাসের উপস্থিতির খবরকে বিস্ময়কর বলতে নারাজ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। প্রতিটি দেশেই এই ভাইরাস সংক্রমণের প্রাথমিক ঘটনাগুলো খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। মঙ্গলবার জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএইচও মুখপাত্র ক্রিস্টিয়ান লিন্ডমায়ার এই আহ্বান জানান বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।noname

গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর চীনের উহান শহরে প্রথমবার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেয়। এর চার দিন পর ৩১ ডিসেম্বর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে এই সংক্রমণের কথা জানায় চীনা কর্তৃপক্ষ। ফলে ধারণা করা হচ্ছিল জানুয়ারির আগে এই ভাইরাস ইউরোপে পৌঁছায়নি। তবে মঙ্গলবার জানা গেছে গত বছরের ডিসেম্বরে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে এক ব্যক্তি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ওই ব্যক্তি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত বলে ধারণা করা হলেও সম্প্রতি তার চিকিৎসক জানিয়েছেন,পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া গেছে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন।

মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএইচও মুখপাত্র ক্রিস্টিয়ান লিন্ডমায়ার বলেন, ‘এতে সবকিছুর একটা নতুন চিত্র পাওয়া যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘এই অনুসন্ধান কোভিড-১৯ এর বিস্তার নিয়ে আরও ভালো বোঝাপড়ার সুযোগ তৈরি করবে।’

চীনের উহান ছাড়া অন্য কোথাও আগে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে এমন কোনও তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে ফ্রান্সে আক্রান্ত ব্যক্তি কোনওভাবে উহান থেকে ফেরা কোনও ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছিলেন। ওই ব্যক্তি নিজে চীন বা অন্য কোথাও ভ্রমণ না করলেও তার স্ত্রী একটি সুপার শপে কাজ করতেন। সেখানে বিদেশিদের আনাগোনা ছিলো বলে জানা গেছে।

ডব্লিউএইচও মুখপাত্র ক্রিস্টিয়ান লিন্ডমায়ার অন্য দেশগুলোকে ২০১৯ সালের শেষ দিকের নিউমোনিয়ার সংক্রমণের মতো ঘটনাগুলো আবারও খতিয়ে দেখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে এই মহামারির নতুন ও স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি। চীনে ভাইরাসটির উৎপত্তি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা খতিয়ে দেখা সত্যি, সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ।

উল্লেখ্য, চীনের উহান শহরের একটি ভাইরোলোজি গবেষণাগার থেকে করোনাভাইরাসের সৃষ্টি হয়েছে বলে ধারাবাহিকভাবে অভিযোগ করে আসছেন মার্কিন নেতারা। চীনসহ আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের বেশিরভাগই তা অস্বীকার করে আসছেন। গত বৃহস্পতিবার মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স পরিচালকের কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাস মানবসৃষ্ট বা জিনগতভাবে পরিবর্তিত হওয়ার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে ওইদিনই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন চীনের ভাইরোলোজি গবেষণাগার থেকে করোনাভাইরাসের সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি প্রমাণ দেখতে পেয়েছেন। রবিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও একই দাবি করে বলেন,এই সংক্রান্ত তাৎপর্যপূর্ণ প্রমাণ রয়েছে তাদের কাছে।