করোনায় আফ্রিকায় এক লাখ ৯০ হাজার মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা

সংক্রমণ রোধে নেওয়া পদক্ষেপ ব্যর্থ হলে করোনাভাইরাসের মহামারির প্রথম বছরে আফ্রিকা মহাদেশে এক ৯০ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হতে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। কঙ্গোর আঞ্চলিক কার্যালয়ের এক জরিপ উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার এই সতর্কতার কথা জানিয়েছে সংস্থাটি। ওই জরিপে দেখা গেছে, একই সময়ের মধ্যে মহাদেশটির দুই কোটি ৯০ লাখ থেকে চার কোটি ৪০ লাখ মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এই খবর জানিয়েছে।noname

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের মহামারিতে বিশ্ব জুড়ে দুই লাখ ৭৫ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। বিশেষজ্ঞরা বরাবরই বলে আসছেন এই মহামারিতে আফ্রিকা বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। দুর্বল স্বাস্থ্য সেবা, দারিদ্রের উচ্চ হার, কয়েকটি দেশের সংঘাত এবং আগে থেকেই মহামারি চলতে থাকার কারণে মহাদেশটি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে মনে করেন তারা। তবে এখন পর্যন্ত মহাদেশটিতে সংক্রমণের হার ইউরোপ বা যুক্তরাষ্ট্রের মতো মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছায়নি।

ডব্লিউএইচও’র কঙ্গোর আঞ্চলিক কার্যালয়ের জরিপটি আফ্রিকা মহাদেশের ৪৭টি দেশের পূর্বাভাস নমুনায়নের ভিত্তিতে করা হয়েছে। এসব দেশের মোট জনসংখ্যা প্রায় একশো কোটি। সংস্থাটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সংক্রমণের ধীর গতি, বাকি বিশ্বে দেখা যাওয়া কম বয়সীদের মধ্যে মারাত্মক রোগ এবং কম মৃত্যু হারের বিষয়টি মডেলটিতে পর্যালোচনা করা হয়েছে।’ সংক্রমণের ধীর গতির কারণে আফ্রিকায় করোনাভাইরাসের মহামারি দীর্ঘ সময় ধরে চলতে পারে সতর্ক করা হয়েছে।

ডব্লিউএইচও আফ্রিকা পরিচালক মাতসিদিসো মোয়েতে বলেন, আফ্রিকায় কোভিড-১৯ বাকি বিশ্বের মতো বিস্তৃতভাবে ছড়িয়ে না পড়লেও আশঙ্কা রয়েছে এটি ধীরে ধীরে সংক্রমণের হটস্পটে পরিণত হবে। তিনি বলেন, এই অঞ্চলের অনেক দেশের সরকার যদি সক্রিয় পদক্ষেপ না নেয় তাহলে আগামী কয়েক বছর ধরে কোভিড-১৯ আমাদের জীবনের স্থায়ী ঘটনা হয়ে যাবে।

এএফপির হিসাবে এখন পর্যন্ত আফ্রিকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে ৫৩ হাজার ৩৩৪ জনের। আর মৃত্যু হয়েছে দুই হাজার ৬৫ জনের। কয়েকটি দেশে লকডাউন কার্যকর থাকলেও অনেক দেশেই তা নেই আবার কেউ কেউ বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার কথা ভাবছে। এই সপ্তাহে নাইজেরিয়া আফ্রিকার সবচেয়ে জনবহুল শহর লাগোসের লকডাউন তুলে নিয়েছে আর দক্ষিণ আফ্রিকা গত সপ্তাহ থেকেই বিধিনিষেধ শিথিল শুরু করেছে।