সর্বনাশ হয়ে গেছে: মমতা

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্পানের ক্ষয়ক্ষতি করোনাভাইরাসের মহামারি থেকেও মারাত্মক হতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব শুরুর পর বুধবার (২০ মে) রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন এর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এক লাখ কোটি রুপিতে পৌঁছাতে পারে। ঝড়ের তাণ্ডবলীলা বোঝাতে গিয়ে বারবারই তিনি রাজ্যের সর্বনাশ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বলে খবর দিয়েছে আনন্দবাজার পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ।

পশ্চিমবঙ্গে নিজের কার্যালয়ে মমতা বন্দোপাধ্যায়

কয়েক দশকের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সবচেয়ে তীব্র ঘূর্ণিঝড় আম্পান বুধবার বিকেল থেকেই ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানতে শুরু করে। এর আগে সুপার সাইক্লোন থেকে দুর্বল হয়ে মঙ্গলবার ‘অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে’ পরিণত হয় আম্পান। সুন্দরবনের ওপর দিয়ে ভারতের দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনায় ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে এই ঘূর্ণিঝড়।

স্থানীয় সময় রাত নয়টার দিকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের সচিবালয় নবান্নে সংবাদ সম্মেলনে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবের ভয়াবহতা বর্ণনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ সময় তিনি বলেন, ‘দুই ২৪ পরগনা ধ্বংস হয়ে গেছে...বাড়িঘর, নদীর বাঁধ ভেঙে গেছে, ফসলের মাঠ ভেসে গেছে।’ তখন পর্যন্ত ১০ থেকে ১২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়ার কথা জানান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।পশ্চিমবঙ্গের পাথরপ্রতিমায় আম্পানের তাণ্ডব

বুধবার দিনভর ঘূর্ণিঝড় আম্পানের গতি-প্রকৃতির খোঁজ রাখার পর সংবাদ সম্মেলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রাজ্যের পাথরপ্রতিমা, নামখানা, বাসন্তী, কুলতলি, বারুইপুর, সোনারপুর, ভাঙড় থেকে যে ক্ষয়ক্ষতির খবর এসেছে তা ভয়াবহ। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ঝড়ের দাপটে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। গাছ পড়ে মানুষ মারা গেছে, অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ নেই, পানি নেই, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।’ তিনি বলেন, পাথরপ্রতিমা, নামখানা, কাকদ্বীপ, কুলতলি, বারুইপুর, সোনারপুর সব জায়গায় ধ্বংসের ছবি। রাজারহাট, হাসনাবাদ, সন্দেশখালি, গোসাবা, হাবড়া সব জায়গাই বিপর্যস্ত।কলকাতার সড়কে আম্পানের তাণ্ডব

ঝড়ের সময় নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘নবান্নে আমার অফিস কাঁপছিল। মনে হলো যেন যুদ্ধকালীন একটি কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করলাম। ঝড়ের তাণ্ডব হয়তো মাঝরাত পর্যন্ত চলবে।’