ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রাখতে ইউরোপীয় দেশগুলোকে পম্পেও’র আহ্বান

ইরানের বিরুদ্ধ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রাখতে পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষরকারী তিন ইউরোপীয় দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। মঙ্গলবার (৩০ জুন) জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনে এ আহ্বান জানান তিনি।noname
২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি অনুযায়ী আগামী অক্টোবরে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের এ প্রচেষ্টাকে আন্তর্জাতিক আইনের জন্য বড় ধরনের ধাক্কা বলে উল্লেখ করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ। চীন ও রাশিয়াও প্রস্তাবটির বিরোধিতা করেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
২০১৫ সালের জুনে ভিয়েনায় ইরানের সঙ্গে নিরাপত্তা পরিষদের ৫ সদস্য রাষ্ট্র- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন (পি-ফাইভ) ও জার্মানি (ওয়ান) পরমাণু চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। চুক্তি অনুযায়ী, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি না করার প্রতিশ্রুতি দেয় তেহরান। পূর্বসূরী ওবামা আমলে স্বাক্ষরিত এই চুক্তিকে ‘ক্ষয়িষ্ণু ও পচনশীল’ আখ্যা দিয়ে ২০১৮ সালের মে মাসে তা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর নভেম্বরে তেহরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা হয়। অন্যদিকে ইউরোপীয় দেশগুলো এ সমঝোতা বাস্তবায়নের কথা মুখে বললেও কার্যত তারা কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ করে আসছে ইরান। যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়া এবং নিজেদের প্রতিশ্রুতি পালনে ইউরোপীয় দেশগুলোর ব্যর্থতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে দেশটি চুক্তি থেকে আংশিক সরে আসার ঘোষণা দেয়।
পরমাণু সমঝোতা থেকে একতরফাভাবে বেরিয়ে যাবার পরও যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রাখার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে মার্কিন কর্মকর্তারা নিরাপত্তা পরিষদে একটি খসড়া প্রস্তাব পেশ করেছে যা গৃহীত হলে ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা অনির্দিষ্ট কালের জন্য নবায়ন হবে। নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ নম্বর প্রস্তাব অনুযায়ী ইরানের ওপর থেকে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা চলতি বছরের ১৮ অক্টোবর উঠে যাবার কথা ছিল।
মঙ্গলবার নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনে হাজির করা এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর সৌদি আরবে ক্রুজ মিসাইল ও ড্রোন ব্যবহার করে যে হামলা হয়েছিল তার মধ্যে ইরানের তৈরি উপকরণও ছিল। এ ব্যাপারে পম্পেও বলেন, ‘মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ইরান অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করেছে। চিন্তা করুন, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর কী হবে।’
পম্পেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন, ইরানের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলে দেশটি সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও হিজবুল্লাহকে অথ্যাধুনিক অস্ত্র সরবরাহ করবে।