সমঝোতার মধ্য দিয়েই লাদাখ ছেড়েছে চীনা সেনারা: এনডিটিভি

ভারতীয় সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভি দাবি করেছে, লাদাখের গালওয়ান উপত্যকা থেকে দুই দেশের সেনা প্রত্যাহার শুরুর আগে ভারত ও চীনের বিশেষ প্রতিনিধি এই বিষয়ে ঐক্যমতে পৌঁছান। উভয় দেশের নেতৃবৃন্দের নির্দেশনা অনুসরণ করে তারা ভিন্নতাকে বিরোধে রূপান্তর না করার ব্যাপারে সম্মত হন। রবিবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ওয়াং ই’র সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ করেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। ওই ফোনালাপে উভয় পক্ষ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার প্রতি চূড়ান্ত শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে তা পর্যবেক্ষণে রাখতে সম্মত হয়। একই সঙ্গে সেখানকার স্থিতাবস্থা পরিবর্তনে কোনও একক সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকার ব্যাপারেও সম্মত হয় দুই পক্ষ। এনডিটিভি জানিয়েছে, ওই ফোনালাপের পর সোমবার থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে দুই দেশ।ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল

গত ১৫ জুন ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে প্রাণঘাতী সংঘাতের পর লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় সেনা সংখ্যা বৃদ্ধি  চীন। নতুন করে বেশ কিছু অবকাঠামোও নির্মাণ করে তারা। তবে সোমবার ওই অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করে উভয় দেশ। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আপাতত কয়েকটি পেট্রোলিং পয়েন্ট থেকে উভয় দেশই সেনাদের পিছু হটিয়ে নিচ্ছে। তবে পূর্ব লাদাখের প্যাংগং হৃদের উত্তরে ও দেপসাংয়ে পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ওয়াং ই’র সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের টেলিফোনে আলাপের পর ভারত সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, উভয় পক্ষ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেনা সরিয়ে নেওয়া নিশ্চিত করতে একমত হয়েছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, দুই দেশের নেতারা যে গুরুত্বপূর্ণ ঐক্যমতে পৌঁছেছেন তা অনুসরণ করতে সম্মত হয়েছে উভয় পক্ষ।

চীন বলেছে, ‘হুমকি তৈরির পরিবর্তে উভয় পক্ষের উচিত কৌশলগত মূল্যায়ন মেনে চলা, দুই দেশের পরস্পরকে উন্নয়েনর সুযোগ সরবরাহ করা... উভয়েই বিশ্বাস করে সীমান্ত এলাকায় শান্তি এবং স্থিতাবস্থা বজায় রাখা দীর্ঘ মেয়াদে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, যাতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে সীমান্ত প্রশ্ন ভালোভাবে উত্থাপিত হয়। আর সেকারণে ভিন্নতা থেকে বিরোধ বাড়তে থাকা এড়িয়ে যাওয়া উচিত।’

ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আচমকা লাদাখ সফরের দুই দিন পর দুই দেশের বিশেষ প্রতিনিধি পর্যায়ের আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। লাদাখে সেনাদের উদ্দেশে মোদি বলেন, ‘সম্প্রসারণবাদের যুগ শেষ। সম্প্রসারণবাদী শক্তি হয় পরাজিত হয় নয়তো পিছু হটতে বাধ্য হয়।’  

বিশেষ প্রতিনিধি পর্যায়ের আলোচনার আগে ১৫ জুনের সংঘাতের পর চীন ও ভারতের সামরিক কমান্ডাররা তিন দফায় আলোচনায় বসে। তবে এসব বৈঠকে কোনও মীমাংসা হয়নি। গত সপ্তাহে নিয়ন্ত্রণ রেখার ভারতীয় অংশ চুসুলে তৃতীয় দফা বৈঠকের পর ভারতের সরকারি সূত্র জানায় সামরিক ও কূটনৈতিক পর্যায়ে আরও কয়েক দফা আলোচনা হবে।

বিশেষ প্রতিনিধি পর্যায়ের আলোচনায় দুই দেশ কূটনৈতিক ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা পর্যায়ে আলোচনা চালিয়ে যাবে বলে সম্মত হয়েছে। ভারত সরকার জানিয়েছে, এসব আলোচনার পাশাপাশি বিশেষ প্রতিনিধি পর্যায়ের আলোচনাও চলবে।