হার্ড ইমিউনিটি অর্জনের এখনও বহু বাকি: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথন বলেছেন, করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে ব্যাপক জনগোষ্ঠীর মধ্যে সাধারণ রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা তথা হার্ড ইমিউনিটি অর্জনের এখনও বহু বাকি। এজন্য কোনও জনগোষ্ঠীর ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ মানুষের রোগটিকে প্রতিরোধের ক্ষমর্তা অর্জন করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের একটি লাইভ ইভেন্টে জেনেভার ডব্লিউএইচও কার্যালয় থেকে যুক্ত হয়ে এই বিজ্ঞানী বলেন, স্বাভাবিক প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করতে এই ভাইরাস সংক্রমণের আরও কয়েকটি ধাপ পার হতে হবে। ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই-এর প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথন

করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে অন্যতম আলোচিত শব্দ হার্ড ইমিউনিটি। এর মাধ্যমে একটি জনগোষ্ঠীর অধিকাংশ মানুষের কোনও রোগ প্রতিরোধের স্বাভাবিক ক্ষমতা অর্জন করাকে বোঝানো হয়। সাধারণত ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ মানুষ এই ক্ষমতা অর্জন করলে ওই নির্দিষ্ট রোগের ক্ষেত্রে জনগোষ্ঠীটি হার্ড ইমিউনিটি অর্জন করেছে বলে ধরে নেওয়া হয়।

ডব্লিউএইচও-এর প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথন সতর্ক করেছেন, অন্তত আগামী বছর বা আরও কিছু সময় পর্যন্ত ভাইরাসটিকে প্রতিরোধের স্বার্থে সম্ভাব্য সবকিছু করতে হবে। এ সংক্রান্ত কার্যক্রমের গতি বাড়াতে হবে। এই সময়ের মধ্যে বিজ্ঞানীরা এর টিকা নিয়ে কাজ করবেন বলে জানান তিনি।

স্বামীনাথন মনে করেন, ওষুধ উদ্ভাবিত হলে করোনায় মৃতের হার কমে যাবে আর মানুষ ভাইরাসের সঙ্গে বসবাস করাও শিখে যাবে। এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ‘হার্ড ইমিউনিটির ধারণায় জনগোষ্ঠীর ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ মানুষকে এই প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করতে হবে যাতে করে সত্যিকার অর্থে সংক্রমণ শৃঙ্খল ভেঙে দেওয়া সম্ভব হয়।’ তিনি বলেন, ভ্যাকসিনের মাধ্যমে এটা খুব সহজেই করা যায়; মানুষের অসুস্থতা আর মৃত্যু ছাড়াই দ্রুত এটা অর্জন করা যায়। সুতরাং প্রাকৃতিক সংক্রমণের মাধ্যমে হার্ড ইমিউনিটি সৃষ্টি হওয়ার চেয়ে টিকা দিয়ে এটি অর্জন করা ভালো। কেননা প্রাকৃতিক সংক্রমণের মধ্য দিয়ে এই প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করতে গেলে ভাইরাসটির একাধিক তরঙ্গ লাগবে এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে অনেকে মারা যাবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই বিজ্ঞানী আরও বলেন, ‘নির্দিষ্ট সময় পার হলে মানুষ প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন শুরু করবে। আক্রান্ত বিভিন্ন দেশে এখন পর্যন্ত পরিচালিত গবেষণায় দেখা যাচ্ছে সাধারণত ৫ থেকে ১০ শতাংশ মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। অনেক জায়গায় এর পরিমাণও আরও বেশি-প্রায় ২০ শতাংশ পর্যন্ত।’ তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখনও সংক্রমণ পর্যায় পার করায় মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে আর এসব মানুষ নির্দিষ্ট কিছু সময় পর্যন্ত রোগটি প্রতিরোধে সক্ষম থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ফলে তারাও সংক্রমণ শৃঙ্খলে বাধা হিসেবে কাজ করবে।