এবার হংকংয়ের সঙ্গে প্রত্যর্পণ চুক্তি বাতিল করলো নিউ জিল্যান্ড

হংকংয়ের ওপর চীনের আরোপিত নতুন নিরাপত্তা আইন কার্যকর হওয়ার জেরে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলটির সঙ্গে থাকা প্রত্যর্পণ চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে নিউ জিল্যান্ড। আইনটি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইন্সটন পিটারস বলেছেন, হংকংয়ের অপরাধ বিচার ব্যবস্থার ওপর আর বিশ্বাস রাখতে পারছে না নিউ জিল্যান্ড। ভবিষ্যতে চীন যদি ‘এক দেশ, দুই নীতি’র প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে তাহলে এই সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করা হবে বলেও জানান তিনি। এর আগে বিতর্কিত ওই আইনের প্রতিবাদে একই পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া। কাতারিভত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।নিউ জিল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইন্সটন পিটারস

গত ১ জুলাই থেকে হংকংয়ের জন্য নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইন প্রবর্তন করেছে বেইজিং। এই আইনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট কিছু অপরাধের বিচারের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে চীনের হাতে তুলে দিতে পারবে হংকং কর্তৃপক্ষ। সমালোচকেরা বলছেন, এই আইনের কারণে অঞ্চলটির গণতন্ত্রপন্থী কর্মীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার সুযোগ পাবে চীন।

আইনটি কার্যকরের পর থেকেই পশ্চিমা দেশগুলো চীনের কঠোর সমালোচনা শুরু করে। স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হংকংয়ের সঙ্গে আগে থেকেই স্বাক্ষরিত প্রত্যর্পণ চুক্তি বাতিল করতে থাকে একটির পর একটি দেশ। এসব চুক্তি অনুযায়ী পরস্পরের মধ্যে সন্দেহভাজন অপরাধীদের বিনিময় করার সুযোগ ছিল। তবে নতুন আইন কার্যকর হওয়ার পর চুক্তি বাতিল করা দেশগুলো মনে করছে ওই আইনের মাধ্যমে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে চীনা কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে দিতে পারে হংকং। ইতোমধ্যে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়কারী পাঁচটি দেশের জোট ‘ফাইভ আইস’র চারটি দেশই হংকংয়ের সঙ্গে ওই চুক্তি বাতিল করেছে। আর অপর দেশ যুক্তরাষ্ট্রও তা বাতিল করতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছে।

প্রত্যর্পণ চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিয়ে মঙ্গলবার নিউ জিল্যান্ড জানিয়েছে, হংকংয়ের সঙ্গে থাকা যাবতীয় সম্পর্ক পর্যালোচনা করা হচ্ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইন্সটন পিটারস বলেন, এখন থেকে তার দেশ সামরিক সরঞ্জাম, ব্যবহার্য এবং প্রাযুক্তিক পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে হংকংয়ে তেমনটাই বিবেচনা করবে যেমনটা করা হয় চীনকে। এছাড়া নিউ জিল্যান্ডের বাসিন্দাদের জন্য ভ্রমণ সতর্কতাতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে।

উল্লেখ্য, নিউ জিল্যান্ডের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক সহযোগী চীন। দুই দেশের মধ্যে বার্ষিক প্রায় তিন হাজার দুইশো কোটি নিউ জিল্যান্ড ডলারের বাণিজ্য হয়ে থাকে। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় (ডব্লিউএইচও) তাইওয়ানের অন্তর্ভুক্তিতে ওয়েলিংটন সমর্থন দিলে চীন ও নিউ জিল্যান্ডের মধ্যকার সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি হয়।