বন্যপ্রাণী হ্রাসের কারণে হুমকিতে বিশ্ব, নেপথ্যে মানুষের কর্মকাণ্ড

বিশ্বজুড়ে গত ৫০ বছরে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা দুই তৃতীয়াংশ কমে এসেছে। ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড (ডব্লিউডব্লিউএফ) এর একটি প্রতিবেদনে এমন দাবি করা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষের ভোগ-বিলাস ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমের পরিধি বেড়ে যাওয়ার কারণেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

noname

এই অবস্থাকে প্রকৃতির জন্য বড় হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিজ্ঞানীরা। নিজেদের প্রয়োজনেই প্রকৃতি রক্ষায় এগিয়ে আসতে মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

ডব্লিউডব্লিউএফ’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৫০ বছরে স্থলভূমির তিন-চতুর্থাংশ ও সাগরের ৪০ শতাংশ অংশ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সে কারণেই পরিবেশ-প্রকৃতির ক্ষতি অনেক দ্রুততর হয়েছে। এতে মানুষের স্বাস্থ্য ও বন্যপ্রাণীর অস্তিত্বের ওপর অবর্ণনীয় প্রভাব পড়েছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন উজাড় এবং কৃষির সম্প্রসারণের ফলে ১৯৭০-২০১৬ সময়ের মধ্যে ৪ হাজারের বেশি প্রজাতির মেরুদণ্ডী প্রাণীর সংখ্যা ৬৮ শতাংশের বেশি কমে গেছে। বন্যপ্রাণী কমে যাওয়ার হার অব্যাহত থাকলে এবং মানুষজনের উপস্থিতি বন্যপ্রাণীর আরও কাছে চলে গেলে ভবিষ্যতে নানা ধরনের মহামারির শঙ্কা আরও বেড়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।

ডব্লিউডব্লিউএফ ও জুলোজিক্যাল সোসাইটি অব লন্ডনের সমন্বয়ে ২০২০ লিভিং প্ল্যানেট রিপোর্টের ত্রয়োদশ সংস্করণটি করা হয়েছে। এতে ডব্লিউডব্লিউএফ ইন্টারন্যাশনালের মহাপরিচালক মার্কো ল্যাম্বারতিনি এএফপিকে জানান, ১৯৭০ সাল থেকে বিশ্বের জীববৈচিত্র্য ব্যাপকভাবে কমেছে। তিনি বলেছেন, ‘তিরিশ বছর ধরে আমরা জীববৈচিত্র্যের বিষয়টি লক্ষ্য করে আসছি। কমার গতি বাড়ছেই বাড়ছে। ভুল পথের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ২০১৬ সাল পর্যন্ত বন্যপ্রাণী ৬০ শতাংশ কমেছে বলে আমরা উল্লেখ করেছিলাম। এখন ৭০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।’

প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী তানিয়া স্টিল বলেছেন, যে পৃথিবী আমাদের আবাস, আমরা তাকেই ধ্বংস করে ফেলেছি। এতে আমাদের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও টিকে থাকাটা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাচ্ছে। এখন প্রকৃতি ব্যাকুল হয়ে আমাদের সংকেত বাণী পাঠাচ্ছে। কেননা সময় ফুরিয়ে আসছে।