এবার ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের ঘোষণা বাহরাইনের

সংযুক্ত আরব আমিরাতের পর এবার ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছে সৌদি বলয়ের আরেক দেশ বাহরাইন। ১১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও বাহরাইনের এক যৌথ বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ সমঝোতার নেপথ্য কারিগর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, এতো দ্রুত এ ঘটনা ঘটবে; এটা ছিল অকল্পনীয়।13

টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে ওই বিবৃতি তুলে ধরেছেন ট্রাম্প। এ ঘটনাকে ঐতিহাসিক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন তিনি।

তিন দেশের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শুক্রবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ও বাহরাইনের রাজার সঙ্গে ট্রাম্পের আলোচনার পরই এ বিষয়ে একমত হয় সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো।

বিবৃতিতে এ ঘটনাকে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় একটি ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

এর আগে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো যেন ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে সেজন্য সৌদি আরবকে মধ্যস্থতার অনুরোধ জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। একইসঙ্গে ইসরায়েল-আমিরাতের মধ্যকার ফ্লাইট চলাচলের জন্য সৌদি আকাশসীমা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি।

আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর হোয়াইট হাউসে আনুষ্ঠানিক চুক্তিতে উপনীত হচ্ছে ইসরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প জানিয়েছেন, এখন বাহরাইনও একই অনুষ্ঠানে অংশ নেবে।

এর মধ্য দিয়ে ইসরায়েলের স্বাভাবিক সম্পর্ক তৈরির প্রতিশ্রুতি দেবে মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি বলয়ের দেশ হিসেবে পরিচিত সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন। এর আগে গত ৯ সেপ্টেম্বর আরব লীগের বৈঠকে দৃশ্যত ফিলিস্তিনকে প্রত্যাখ্যান করে সংস্থাটির সদস্য দেশগুলো। বৈঠকে ইসরায়েল-আমিরাত চুক্তির বিরোধিতা করতে ফিলিস্তিনের প্রস্তাব নাকচ করে দেওয়া হয়।

সৌদি আরবের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের প্রকাশ্য কোনও ঘোষণা না এলেও গত কয়েক বছর ধরেই দেশ দুটির গোপন সম্পর্কের কথা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত হয়ে আসছে। ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য আটলান্টিককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইসরায়েল ইস্যুতে কথা বলেন এমবিএস নামে পরিচিত সৌদি যুবরাজ ও দেশটির ডি ফ্যাক্টো নেতা মোহাম্মদ বিন সালমান। তিনি বলেন, বহু বিষয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদি আরবের অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে।

ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে জন্ম নেওয়া ইসরায়েল রাষ্ট্রের অস্তিত্বের অধিকারের পক্ষে নিজের অবস্থানের কথা জানান এমবিএস। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনিদের পাশাপাশি ইসরায়েলিদেরও তাদের নিজেদের ভূমিতে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাসের ‘অধিকার’ রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা ও সিনিয়র উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনার বলেছেন, আমিরাতের মতো করে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সৌদিসহ অন্যান্য উপসাগরীয় দেশগুলোও ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তিতে আবদ্ধ হবে।

নিউজউইককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কুশনার আমিরাতের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘বহু দেশ নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। মানুষের প্রতিক্রিয়া কী হয়, তা দেখার চেষ্টা করছে তারা। এখানকার (আরব) তরুণ প্রজন্ম ব্যাপারটি নিয়ে খুব আলোড়িত। তবে বয়োজ্যেষ্ঠদের মধ্যে কিছু সদস্য এখনও নস্টালজিয়ায় ভুগছেন এবং কোনও ঝুঁকি নিতে চান না।’

আমিরাতের পর উপসাগরীয় বাকি দেশগুলোও ইসরায়েলের সঙ্গে ‘অনিবার্যভাবে’ চুক্তি করবে উল্লেখ করে কুশনার বলেন, এখন বিষয় হলো সেটা কতদিনের মধ্যে হবে। সূত্র: আল জাজিরা।

/এমপি/